1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুরমার তীর যেন ময়লার ভাগাড়

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

আকরাম উদ্দিন ::
যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সুরমার তীর যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে নদী তীরের বিভিন্ন এলাকায় দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নদী তীরবর্তী পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাসহ নৌপথের যাত্রীদের। এসব ময়লা-আবর্জনা থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা ও মাছি এবং নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন।
সুনামগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শহরকে প্রতিদিন পরিষ্কার রাখা হচ্ছে। জমাকৃত ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে ফেলা হচ্ছে। সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে শহরের বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ডাস্টবিন ব্যবহার করলে শহর এবং পৌর এলাকার নদীর তীরও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে। সুরমা নদীর পানি গৃহস্থালিসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যাবে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা সুরমা নদীর তীরের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় ময়লা-আবর্জনা স্তূপ। নদীর তীরজুড়ে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। এতে মশা-মাছির বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে, দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশের এলাকায়। দূষিত হচ্ছে নদীর পানি ও আশপাশের পরিবেশ। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহও।
পৌর শহরের ষোলঘর এলাকার নদীর তীরে, ইস্কন আখড়া ও সদর ভূমি অফিস সংলগ্ন নদীর তীরে, উকিলপাড়া ও লঞ্চঘাট এলাকার নদীর তীরের একাধিক স্থানে, পুলিশ ফাঁড়ির পশ্চিমে নদীর তীরে, সবজিবাজার এলাকার নদীর তীরে, জগন্নাথবাড়ি, সুরমা মার্কেট, চাঁন্দিঘাট এলাকার তীরের একাধিক স্থানে, পশ্চিমবাজার নদীর তীরের বিভিন্ন স্থানে, উত্তর আরপিননগর এলাকার নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ দেখা গেছে। এছাড়াও সাহেববাড়ি ঘাট এলাকায় নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনা নিয়মিত ফেলা হচ্ছে।
এছাড়াও শহরের বিভিন্ন এলাকার নদী তীর ঘুরে দেখা গেছে, বাথরুম ও টয়লেটের নোংরা পানি ছড়িয়ে পড়ছে নদীর তীরে। নদীর তীরের এসব ময়লা-আবর্জনা বৃষ্টিতে ও বাতাসে গড়িয়ে পড়ছে নদীতে। যেসব এলাকায় ময়লা ফেলা হচ্ছে, সেসব এলাকার নদীর তীরে চলাফেরা করা যাচ্ছে না।
জামালগঞ্জের লঞ্চযাত্রী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘লঞ্চ ছাড়তে দেরি হলে আমরা লঞ্চঘাটে বসে প্রায় সময় নাস্তা করি। কিন্তু ইদানিং হোটেলের ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধে বসা যায় না। পরে লঞ্চে গিয়ে নাস্তা করি।’
ইব্রাহীমপুর গ্রামের সাজাউর রহমান ও শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘লঞ্চযাত্রী, নদীর ফেরি দিয়ে শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ চলাফেরা করেন। এই এলাকার মানুষজনকে দুর্গন্ধ সইতে হয়। লঞ্চঘাটের সব ব্যবসায়ীরা মিলে যদি ডাস্টবিন ব্যবহার করতেন, তখন পরিবেশও সুন্দর থাকতো। মানুষও সুস্থ থাকতো।’
চান্দিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী শান্তি পাল ও কালা মিয়া বলেন, ‘নদী তীরের ময়লা-আবর্জনা থেকে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে প্রতিনিয়ত। পথচারীদের নাকে রুমাল চেপে চলতে হয়। ফেরি নৌকার যাত্রীরা খুবই ভোগান্তির শিকার হন।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম বলেন, ‘শুধুমাত্র আমাদের অসচেতনতার কারণেই শহরের একাধিক স্থানে নদী তীর বিপন্ন হতে চলেছে। নদীর তীরে আবর্জনা ফেলায় দূষিত হচ্ছে পানি। যদি মানুষ সচেতন না হয়, তাহলে নদী বাঁচানো যাবে না। তাই সবার আগে নিজেদের সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে পৌর কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।’
সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সবার আগে আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। সচেতন হতে হবে সকল নাগরিককে। সচেতন হলেই আমাদের নদীর তীর রক্ষা করা সম্ভব হবে। শহর পরিষ্কার রাখার জন্য জমাকৃত ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে ফেলা হচ্ছে। সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে শহরের বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ডাস্টবিনে আবর্জনা ফেললে শহর এবং পৌর এলাকার সুরমা নদীর তীরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে। নদীর পানি বিভিন্ন কাজে মানুষ ব্যবহার করতে পারবে। এই জন্য সকল নাগরিক পৌর এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কার্যক্রমে অংশ নিতে হবে আন্তরিকভাবে। তবে নদীর তীরে কারা ময়লা আবর্জনা ছুঁড়ে ফেলে পরিবেশ দূষণ করছেন, এটা অবশ্যই খোঁজে দেখা হবে।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com