প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি আসলে সর্বস্তরে বাংলাভাষা চালুর সোচ্চার আওয়াজ শোনা যায়। কিন্তু ফেব্রুয়ারি চলে গেলে সে আওয়াজ আস্তে আস্তে ক্ষীণ হয়ে যায়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমরা বাংলা সনের ৮ ফাল্গুনকে এখনও ভাষা দিবস হিসেবে চালু করতে পারিনি।
অমর একুশের চেতনা বাঙালি জাতির কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বুকের রক্ত দিয়ে গেছেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেকে। বিনিময়ে আমরা পেয়েছি বাংলা ভাষা। আন্তর্জাতিকভাবে আজ এই ভাষা স্বীকৃত। আজ আমাদের ভাষা দিবস বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়, যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপিত হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে আমরা আমাদের ভাষাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারছি না। সাইনবোর্ড লেখা হয় ইংরেজিতে। বাংলা লেখা হলে বানানে থাকে ভুল। বাংলা একাডেমিও এ ব্যাপারে প্রচেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু তেমন সফলতা আসেনি। সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালুর আওয়াজ বার বার উঠলেও তার সুফল এখনো পাওয়া যায়নি। একুশের চেতনা আমরা এখনো যথাযথভাবে জাতীয় ও ব্যক্তিজীবনে প্রয়োগ করতে পারিনি।
আমরা সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি, বাংলা ভাষা সংরক্ষণে আরো জোরদার ভূমিকা রাখার জন্য। এ দেশে এখনো অনেক ভাষাসৈনিক জীবিত আছেন, যাঁরা অতিকষ্টে জীবন যাপন করছেন। তাঁদের পাশে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। তাছাড়া সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের দায়িত্ব এখন সরকারের ঘাড়েই বর্তায়। এজন্য সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদের আলোকে জাতীয় সংসদ আইন পাস করলেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। ভাষার মাসে আমাদের অঙ্গীকার হোক- সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন। এর মাধ্যমে ভাষাশহীদদের প্রতি আমরা সর্বোচ্চ সম্মান জানাতে পারি।