স্টাফ রিপোর্টার ::
জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিতব্য ‘সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার’ নির্মাণ প্রসঙ্গ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট। শনিবার সন্ধ্যায় জেলা পরিষদ রেস্ট হাউজে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার মেয়র আয়ূব বখত জগলুল, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী জর্জেচ মিঞাসহ আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভায় নূরুল হুদা মুকুট বলেন, জেলা সমন্বয় সভায় পাস হয়েই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিএস রোডস্থ শহীদ মিনারের জায়গা ছোট হওয়ায় সেখানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায়নি। এছাড়া জায়গা নিয়ে কিছুটা জটিলতা আছে। জেলা পরিষদের স্টেডিয়াম সংলগ্ন পুকুরে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন। সেক্ষেত্রে জায়গা না পেয়ে বিকল্প হিসেবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি দ্রুত এটি নির্মাণ করা না হয় তাহলে টাকা ফেরত যাবার সম্ভাবনা আছে। তবে আমরা শহরের সব শ্রেণির মানুষের দাবি অগ্রাহ্য করে এটি নির্মাণ করবো না। এতে সবার মতামত নেয়া হবে। দরকার পড়লে ‘কেন্দ্রীয়’ শব্দটি কেটে শুধু ‘শহীদ মিনার’ নামকরণ করা হবে। অন্যান্য শহীদ মিনারের মত এখানে সর্বসাধারণ নানা কর্মসূচি পালন করতে পারবেন।
তাঁর বক্তব্য চলাকালে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আয়ূব বখত জগলুল সভাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় তিনি বলেন, শহীদ স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনার ভিন্ন কথা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে শহীদ মিনার নির্মাণ হলে কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। বর্তমানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভেতরের যে স্মৃতিস্তম্ভ আছে সেখানেও নানা দিবসে ফুল দেয়া হয়। তখন সমস্যা হয় না, নতুনটি নির্মিত হলেও সমস্যা হবে না।
এসময় সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, চেতনার বাতিঘর, আবেগ, শ্রদ্ধার জায়গা কেন সংরক্ষিত এলাকায় হবে? অফিস চলাকালীন সময়ে তো কোন কর্মসূচি পালন, মাইক বাজানো যাবে না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব আন্দোলন তো আর শহীদ মিনারে হয় না, অন্য জায়গায়ও আন্দোলন হয়। তিনি বলেন, দরকার পড়লে ডিএস রোডের শহীদ মিনার আধুনিকায়ন করা হবে। আরো শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী জর্জেচ মিঞা বলেন, নকশা অনুসারে ডিএস রোডের শহীদ মিনারের জায়গায় কেন্দ্রীয় শহীদ নির্মাণ করা যাবে না। শহীদ মিনারের আগের জায়গাটিও বাতিল করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষকলীগ নেতা শংকর দাস, পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র নূরুল ইসলাম বজলু, তাহিরপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কর, যুবলীগ নেতা সবুজ কান্তি দাস প্রমুখ।
এদিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে শহরে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে আজ রোববারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার রাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে দৈনিক সুনামকণ্ঠকে জানান নূরুল হুদা মুকুটের ব্যক্তিগত সহকারি মিল্টন পুরকায়স্থ। তিনি জানান, রোববারের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। বিকেলে শহরের সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করে পরে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।