আকরাম উদ্দিন ::
বিশ্ব মানবতার মঙ্গল ও বাংলাদেশের শান্তি কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা ইজতেমা সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওইদিন আখেরি মোনাজাতে মুসল্লিদের আগমনে ইজতেমা ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
তিন দিনব্যাপী জেলা ইজতেমা শহরের আব্দুজ জহুর সেতুর সংলগ্ন জায়গায় গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়। আখেরি মোনাজাতে দেশ-বিদেশের এবং জেলার বিভিন্ন স্থানের লাখ লাখ মুসল্লির আগমন হয়। ইজতেমা ময়দানে আখেরি মোনাজাত পেশ করেন কাকরাইল জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফিজ জুবায়ের আহমদ।
ইজতেমা ময়দানে আখেরি মোনাজাতে উপস্থিত লাখ লাখ মুসল্লির ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে। আল্লাহর কাছে মুসল্লিরা তাঁদের জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ চান। অনেকে কান্নাকাটি করে তাঁদের মনের বাসনা পূরণের জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান। মুসল্লিরা সারা জীবনের গুনাহ মাফ চেয়ে ইহকাল ও পরকালের শান্তি চান।
ইজতেমা ময়দানে আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে ওইদিন বাদ ফজর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানের ধর্মপ্রাণ মানুষজন আসতে শুরু করেন। সকাল ৮টা থেকে শহরের কালীবাড়ি পয়েন্ট থেকে আব্দুজ জহুর সেতুর অ্যাপ্রোচ পর্যন্ত যানজট ছিল। এসময় মুসল্লিরা পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে হাজির হতে দেখা যায়। দায়িত্ব পালনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন তৎপর।
সকাল ১১টায় আব্দুজ জহুর সেতুর অ্যাপ্রোচসহ পুরো সেতু এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। ইজতেমা ময়দানের আশপাশ এলাকায় খালি জায়গা মুসল্লিদের আগমনে ভরে ওঠে। পার্শ্ববর্তী এলাকার বাড়িঘর, ঘরের ছাদেও ছিল ধর্মপ্রাণদের সীমাহীন উপস্থিতি। ওইদিন ভোর থেকে নদী পথে ও সড়ক পথে বিভিন্ন স্থান থেকে আসেন মুসল্লিরা।
ইজতেমা ময়দানের পার্শ্ববর্তী সুরমা নদীর তীরে ছিল মুসল্লিবহনকারী অসংখ্য নৌকা ও লঞ্চ। ওয়েজখালি এলাকায় সড়কে ছিল মুসল্লিবহনকারী যানবাহনের বহর।
ইজতেমা ময়দানে দুপুর ১২টায় শুরু হয় আখেরি মোনাজাত। এ সময় ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকা তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। চারদিক ছিল লোকে লোকারণ্য। ইজতেমা ময়দানের সবদিকেই দেখা যায় লাখ লাখ মুসল্লির উপস্থিতি। আখেরি মোনাজাতে শরীক হতে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন ধর্মপ্রাণ মহিলারাও। তারা ইজতেমা ময়দানের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বাসা-বাড়িতে অবস্থান করেন। দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে শেষ হয় আখেরি মোনাজাত।
মোনাজাত শেষে মুসল্লিদের শুরু হয় বাড়ি ফেরার পালা। এ সময় মুসল্লিদের আল্লাহ আকবর ধ্বনিতে মুখরিত হয় চারপাশ। পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেন।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা ইজতেমায় এবার মুসল্লির আগমন হয়েছে স্মরণকালের মতো। এবার প্যান্ডেলের ভেতরে ১২ লাখ মুসল্লির অবস্থানের ব্যবস্থা করা হলেও প্যান্ডেলের বাইরে এবং আশপাশ এলাকায় অবস্থান করেছেন লাখ লাখ মুসল্লি। শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক।