মাহমুদুর রহমান তারেক ::
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) নির্বাচনী এলাকায় শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত, এমন আলোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জয়া সেনগুপ্তের সাক্ষাতের বিষয়টি প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারটি আরো গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠজনরাও তাকে প্রার্থী করার দাবি জানাচ্ছেন।
আ.লীগ সূত্রে জানা যায়, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে ছায়ারমত ছিলেন জয়া সেনগুপ্ত। একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানে কাজ করার কারণে প্রকাশ্যে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ না নিলেও রাজনৈতিক সবকিছুই তার জানা। কেন্দ্র ও দিরাই-শাল্লার রাজনীতির সব সময়ই খোঁজ খবর রাখতেন। এলাকার সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে জয়া সেনগুপ্তের সুসম্পর্ক। সেই সূত্র ধরেই শূন্য হওয়া আসনে হাল ধরতে যাচ্ছেন জয়া সেন।
আ.লীগ নেতারা জানান, দলের সব প্রবীণ নেতার উত্তরসূরিদের সব সময়ই গুরুত্ব দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। প্রয়াত নেতাদের সন্তান ও স্ত্রীরা অনেকেই এখন এমপি, মন্ত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৩০মিনিটে জাতীয় সংসদস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন জয়া সেনগুপ্ত। এর আগে দেখা করার জন্য জয়া সেনগুপ্তকে ডাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী কিছু সময় কথা বলেন জয়া সেনগুপ্তের সঙ্গে। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পুত্রবধূ রাখী সেনগুপ্ত, তার মা মায়ারানী ভৌমিক এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হক।
প্রধানমন্ত্রীকে এ সময় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সমস্যা ও পারিবারিক নানা বিষয়ে অবহিত করেন তারা। একই সঙ্গে আগামীতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবারের ভালোমন্দের দিকে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারি মো. কামরুল হক জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ড. জয়া সেনগুপ্তের সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে জয়া সেনগুপ্তকে আশ্বস্ত করে অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব নেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আলোচনা হয় দিরাই-শাল্লা নিয়েও।
জেলা বারের পিপি অ্যাড. খায়রুল কবির রুমেন বলেন, জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হারিয়ে আমরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি। তাঁর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নেন এবং তার পরিবারের কাউকে যেন শূন্য আসনে মনোনয়ন দেয়া হয় সেই দাবি জানাই।
ড. জয়া সেনগুপ্ত বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ডক্টরেট। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার শিক্ষা বিভাগে সমন্বয়কারী পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সুরঞ্জিত-জয়া সেনগুপ্ত দম্পতির একমাত্র সন্তান সৌমেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক এবং কানাডা থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে বর্তমানে ব্যবসায়ী। সৌমেনের স্ত্রী রাখী মৈত্রী সেনগুপ্ত পেশায় চিকিৎসক।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গত রোববার ভোরে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।