1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জলমহাল দখল নিয়ে সংঘাতে বাড়ছে প্রাণহানি

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৭

মাহমুদুর রহমান তারেক ::
সুনামগঞ্জে জলমহাল দখল নিয়ে সংঘাতে বাড়ছে প্রাণহানি। এসব সংঘাতে আহত অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সর্বশেষ গত ১৭ জানুয়ারি দিরাইয়ে জারলিয়া জলমহালে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৩জন নিহত হয়। এদিকে জলমহাল কেন্দ্রিক সংঘর্ষ এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলায় ১৩৩টি খাল, ৯৭৬টি বিল ও ৮৪টি হাওর, প্লাবনভূমি ১৪২টি রয়েছে। ২০ একরের উপরে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা আর ২০ একরের নিচে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ইজারা দেয়া হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে ৩ বছর ও প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ বছরের জন্য প্রতিটি জলমহাল ইজারা দেয়া হয়। জলমহাল ইজারার জন্য মৎসজীবী সমবায় সমিতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ইজারা নিতে হয়। জেলার সবক’টি উপজেলা নানা ক্যাটাগরিতে ৬২৯টি মৎসজীবী সমবায় সমিতি রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, জেলার অর্ধ শতাধিক জলমহাল দখল নিয়ে বিরোধ চরম পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ, জগন্নাথপুর উপজেলায় বিরোধপূর্ণ জলমহাল বেশি। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কিছু রাজনৈতিক নেতার কারণে এসব জলমহালে বিরোধ দেখা দিয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বিরোধপূর্ণ জলমহাল সম্পর্কে খোঁজ নিতে থানা পর্যায়ে নির্দেশও দেয়া হয়েছে। দিরাইয়ে বিরোধপূর্ণ জলমহালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।
মৎস্যজীবী নেতারা জানান, মৎস্য সমিতির মাধ্যমে ইজারা নেয়া হলেও প্রকৃত মৎস্যজীবীরা জলমহাল দখলভোগ কখনোই করতে পারেন না। স্থানীয় প্রভাবশালী, কিছু রাজনৈতিক নেতা নানা প্রলোভন দেখিয়ে জলমহাল ভোগদখল করেন। সেক্ষেত্রে ইজারা পাওয়া সমিতির নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতারা সাব লিজ নিয়ে নেন। নামমাত্র টাকায় জলমহাল বাগিয়ে নেন তারা।
তবে সমিতির নেতৃবৃন্দ অনেক সময় একাধিক ব্যক্তির কাছে জলমহাল সাব-ইজারা দিয়ে থাকেন। তখনই সংঘাত শুরু হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা, মামলার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ, হামলা, মামলা হলেই প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতারা নানাভাবে জলমহাল ভোগদখল করেন। ইজারা নিয়ে জলমহালের কাছে যেতে পারেন না সাধারণ মৎস্যজীবীরা।
দিরাই উপজেলার জারলিয়া জলমহালে দীর্ঘদিন ধরেই দুই রাজনৈতিক নেতার মধ্যে বিরোধ চলছিল। ইজারা পাওয়া মৎস্য সমিতির এক নেতা দুই পক্ষকেই সাব-লিজ দিয়ে দেন। পরে দখল নিতে গিয়ে দু’পক্ষই বন্দুক যুদ্ধে জড়িয়ে যায়। এতে তিন জন নিহত হয়। এর আগে গত বছরের ২২ নভেম্বর শাল্লায় দু’পক্ষের সংঘের্ষ ৪০জন, ৭ নভেম্বর দিরাইয়ে গুলিবিদ্ধসহ ৫জন আহত, ২ জানুয়ারি সদর উপজেলার কোরবাননগর ইউপি’র মনহরপুরে সংঘর্ষে ১জন নিহত, ২৭ ডিসেম্বর শাল্লার চ-িডহর জলমহালে সংঘর্ষে ১জন নিহত ও ২৫জন আহত হয়। এছাড়া গত এক বছরে আরো অনেক সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ হতাহত হয়েছেন। এসব সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের সঙ্গে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হয়েছে। তবে এসব অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অধিকাংশই উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
হাওর নিয়ে অনেক দিন ধরেই কাজ করছেন সালেহীন চৌধুরী শুভ। তিনি বলেন, প্রকৃত মৎস্যজীবীরা কখনো জলমহাল ভোগদখল করতে পারেন না। প্রতিটি মৎস্যজীবী সমিতির আড়ালে থাকেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ ও রাজনৈতিক নেতারা। প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখিয়ে জলমহাল ভোগ করতে গিয়ে সংঘাতের সৃষ্টি হয়, তখন প্রাণ হারায় সাধারণ মৎস্যজীবীরা।
জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com