বিদ্যালয়ে আসার পথে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও অপহরণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটিয়েছে তিন বখাটে। ঘটনাটি ঘটেছে তাহিরপুর উপজেলায়। জানা যায়Ñ বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই ছাত্রী তার সহপাঠীকে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে আসার পথে মানিগাঁও গুটিলা সড়কে মানিগাঁও গ্রামের ফরিদ মিয়ার বখাটে ছেলে হুমায়ুন কবীর তার অপর সহযোগী একই গ্রামের ফিরু মিয়ার ছেলে জালাল উদ্দিন ও অজ্ঞাতনামা এক মোটর সাইকেল চালককে সাথে নিয়ে ওই ছাত্রী ও তার সহপাঠীর পথরোধ করে। এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি গলায় ঠেকিয়ে ছাত্রীটির মুখে গামছা বেঁধে জোর করে তুলে নিয়ে যেতে টানাহেচড়া শুরু করে। বাধা দিলে তিন বখাটে মিলে ওই ছাত্রীটিকে সড়কে ফেলে বেধড়ক মারপিট করে শ্লীলতাহানি ঘটায়। এ সময় ছাত্রীটি ও তার সহপাঠী চিৎকার করলে গ্রামবাসী এগিয়ে আসতে থাকলে বখাটেরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। আমরা এই বখাটেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
বখাটেদের এমন উৎপাতের চিত্র প্রায়ই দেখা যায়। কোথাও প্রতিবাদ হয়, প্রতিবাদকারীরাও নাজেহাল হয়, কোথাও নীরবে অপমান সহ্য করে কোমলমতি কিশোরী বা তরুণী শিক্ষার্থীরা।
একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বখাটেদের উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়Ñ গত বছরের প্রথম আট মাসে ২৯ জন কিশোরী-তরুণীর প্রাণ ঝরেছে বখাটেদের উৎপাতের শিকার হয়ে।
সমাজে নানা ধরনের অস্থিরতা বৃদ্ধি পেলে সব ধরনের সামাজিক অপরাধ বেড়ে যেতে দেখা যায়। মাদকাসক্তি, সামাজিক অবক্ষয়, ইভটিজিং, নারী ও শিশু নির্যাতন অতীতেও ছিল। কিন্তু তার মাত্রা বর্তমান সময়ে কখনো-কখনো এতোটাই বৃদ্ধি পায় যে, সমাজের সব মহলকেই নড়ে-চড়ে বসতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বখাটেরা নিজ নিজ এলাকায় প্রভাবশালী অথবা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় রয়েছে। এই কারণে বহু ক্ষেত্রেই এইসব সন্ত্রাসী বখাটের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। কিংবা প্রতিবাদ করলেও আরো বেশি বিপদ নেমে আসে। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বখাটে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে সর্বাগ্রে। বখাটেদের শক্তিশূন্য করতে হবে। আমরা সর্বত্র বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জোর আহ্বান জানাই।