বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শিক্ষার মানউন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কোন শিক্ষার্থী যাতে ঝরে না পড়ে বা শিক্ষাগ্রহণে তারা উৎসাহ হারিয়ে না ফেলে, অর্থাভাবে যাতে বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ না হয়, সে লক্ষ্যে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য দিন দিন দেশের শিক্ষার হার বাড়ছে, বাড়ছে শিক্ষার মান। সরকার যতই শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রচেষ্টা গ্রহণ করুক না কেন, শিক্ষাক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে সরকারের একক প্রচেষ্টায় শিক্ষার মান উন্নয়ন কিংবা শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়ার বিষয়টি রোধ করা সম্ভব হবে না।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত একটি সংবাদ থেকে জানা যায়Ñ দোয়ারাবাজার উপজেলার আমবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। চরম ভোগান্তির মধ্যে পাঠগ্রহণ করছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের পাশাপাশি শৌচাগার সমস্যায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বেশ ক’জন খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা অতিরিক্ত পাঠদানে হিমশিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে বিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান বিভাগ চালু থাকলেও পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় ব্যবহারিক ক্লাস যথাযথভাবে নেয়া হচ্ছে না। স্কুলের শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল যুগেও কম্পিউটার সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো ধারণা পাচ্ছে না।
মানসম্মত শিক্ষা দানের জন্য শ্রেণিকক্ষসহ পর্যাপ্ত অবকাঠামো নিশ্চিত করা জরুরি। বাংলাদেশ সহ¯্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের অন্যতম শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে সাফল্য অর্জন করছে। তবে এক্ষেত্রে কিছু দুর্বলতাও রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকট অন্যতম। আমরা মনে করি শিক্ষার ভিত উন্নত করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। এজন্য সর্বাগ্রে অবকাঠামো উন্নয়নে দৃষ্টি দিতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণ নিশ্চিত করতে হবে। একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, শিক্ষকরাই মানসম্মত শিক্ষাদানের প্রধান হাতিয়ার। তবে বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষার প্রভূত উন্নয়নে অবকাঠামোগত উন্নয়নও সময়ের অন্যতম দাবি। এমতাবস্থায় শ্রেণিকক্ষ সংকটসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি দিতে হবে।