1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৮:১১ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

গল্প নয় সত্যি, মাত্র কয়েক বছর আগের কথা : ৫০

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৭

একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, রণাঙ্গনের সক্রিয় সাহসী যোদ্ধা, আইয়ুব খা বিরোধী আন্দোলনের প্রখ্যাত ছাত্রনেতা, সফল লড়াকু জননেতা, সুনামগঞ্জের সাংবাদিক সমাজের অন্যতম নেতা, বারবার বিভিন্ন শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক নির্যাতিত, বিভিন্ন আন্দোলনে বিভিন্ন সময় কারাবরণকারী, অতি বিপ্লবীদের হাতে গুলি খেয়েও নিজের পথ থেকে বিচ্যুত হননি যিনি, বারবার বিভিন্ন শাসকগোষ্ঠীর দেয়া ক্ষমতার টুপ যিনি গ্রহণ করেননি- সেই মানুষটি ছিলেন জনাব গোলাম রব্বানী।
যিনি শুধু দেশ ও দশের জন্য দিয়েই গেছেন, বিনিময়ে পাননি বা চাননি তাঁর কর্মের প্রতিদান। অথচ তিনি যদি একটু আদর্শচ্যুত হয়ে বর্তমানকালের কিছু রাজনীতিবিদদের মতো চলতেন তাহলে পেতেন অনেক বড় বড় পদসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। আমার মনে হয়, আমরা তাঁকে যথাযথভবে মূল্যায়ন করিনি। তাঁর হাতে রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছে সুনামগঞ্জের অনেক রাজনীতিবিদের।
জনাব গোলাম রব্বানী ১৯৪৬ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের উজানিগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম আরব আলী সরপঞ্চ। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের ফটো ভাঙ্গার ও তার সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে দু’মাস কারাবরণ করেন। ১৯৬১ সালে কুখ্যাত মজিদ খান শিক্ষা কমিশন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে আবারো দেড় মাস কারাবরণ করেন। ১৯৬৬ সালের বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ছয় দফা আন্দোলনেরও নেতা ছিলেন। ১৯৬৭-৬৮ সালে ছাত্র ইউনিয়নের প্যানেল নিয়ে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদে ভি.পি নির্বাচিত হন।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে এমপি পদে নির্বাচন করার জন্য ন্যাপ মোজাফফর থেকে দিরাই-শাল্লা আসনে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরে সুরঞ্জিত সেনের সমর্থনে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও রণাঙ্গনে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুই বছর ছয় মাস আত্মগোপনে থাকেন। প্রেসিডেন্ট এরশাদের হ্যাঁ/না গণভোটের প্রতিবাদ করতে গিয়ে দেড় মাস কারাবরণ করেন।
স্বাধীনতার পরে সুনামগঞ্জ থেকে প্রথম প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘বিন্দু বিন্দু রক্তে’ পত্রিকার স¤পাদক ছিলেন গোলাম রব্বানী। পরবর্তী পর্যায়ে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘গ্রাম বাংলার কথা’র সম্পাদক ছিলেন। সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং সিলেট বিভাগের স¤পাদক পরিষদের সহ-সভাপতিও ছিলেন। সুনামগঞ্জ মহিলা কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্যও ছিলেন। জয়কলস হাই স্কুলের সাধারণ স¤পাদক, সিলেট বিভাগ আন্দোলনের সুনামগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক ছিলেন। জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কমিটির সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি, সিলেট-সুনামগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ছিলেন। সুনামগঞ্জ সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। বিভিন্ন সংগঠনের সাথে তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন এবং প্রত্যেক কমিটিতেই তিনি তাঁর যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখেন।
এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শহরে প্রথম যে মিছিলটি হত সেই মিছিল ও পিকেটিংয়ের নেতৃত্বে থাকতেন জনাব গোলাম রব্বানী। আজীবন সংগ্রামী এই মানুষটি সম্পর্কে লিখতে গেলে একটি বইয়ের কয়েক খন্ড দরকার। ফেসবুকের ছোট পাতায় অসম্ভব।
তার একমাত্র পুত্র বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ফজলে রাব্বী স্মরণের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে তার পিতার গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামী ইতিহাস হারিয়ে যাচ্ছে, হারিয়ে যাওয়া থেকে ফিরিয়ে এনে যেন সে সংরক্ষণ করে।
জনাব গোলাম রব্বানীর স্ত্রী বেগম শামছুন নাহার বেগম শাহানা সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সংরক্ষিত মহিলা আসনের বর্তমান সাংসদ, তার প্রথম কন্যা- ভাষা রেহনুমা বিবাহিত ও ঢাকা হাইকোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত। তার দ্বিতীয় কন্যা কথা রেহনুমা সম্প্রতি এম.বি.বি.এস পাস করে সিলেট রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল হসপিটালে কর্মরত।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com