আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার ৮৫ ভাগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের সমস্ত উন্নয়ন তৎপরতা এ কৃষিকে ঘিরেই ধীর পায়ে এগিয়ে চলছে। কৃষি থেকেই জাতীয় আয়ের ৬০ ভাগ অর্জিত হয়। কৃষি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি। বৈদেশিক রফতানিতে কৃষিপণ্যই বিশেষ অবদান রয়েছে। কৃষি ও কৃষকের সমৃদ্ধির ওপরই দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নির্ভর করে। কৃষির অগ্রগতির সাথে মোট জনগোষ্ঠীর খাদ্য সরবরাহ, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান ইত্যাদির প্রত্যক্ষ স¤পর্ক রয়েছে।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়Ñ স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ও চরমহল্লা ইউনিয়নরে জোনিয়ার হাওরের কৃষক বোরোধান রোপণে বেকায়দায় পড়েছেন। জলাবদ্ধতার কারণে এবার বোরো চাষ করতে পারবেন কি-না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন কৃষকরা। প্রায় ১০০ একর জমি যদি পতিত থাকে তাহলে অত্র অঞ্চলের কৃষকরা অসহায় হয়ে পড়বেন। হাওরটি অবস্থান সুরমা নদীর শাখা নদী গানউড়া থেকে সোয়ারাখাল নামক একটি খাল এই হাওরে গিয়ে মিশেছে। এক সময় ওই খালের উৎসমুখ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে গত ৭-৮ বছর ধরে হাওরে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে পানি নিষ্কাশনের গতিপথও বদলে গেছে।
গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় কৃষকরা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তোলে উৎসমুখ খনন করে চাষাবাদ করে আসছিলেন। কিন্তু বর্তমানে ওই উৎসমুখটি সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে যাওয়াতে, কৃষকরা চাঁদা তুলে খনন করার সামর্থ না থাকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় মওসুম শেষ হওয়ার পথে থাকলেও এখনো ওই হাওর জমিতে কোমর সমান পানি রয়ে গেছে। এ নিয়েও উদ্বিগ্ন কৃষকরা।
এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য ইতোমধ্যেই কৃষকরা স্থানীয় প্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে কৃষকদের বিষয়টি দায়িত্বশীলরা কেউই ভাবছেন না। আমাদের প্রত্যাশাÑ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আর দেরি না করে স্থায়ী জলাবদ্ধতার হাত থেকে ছাতক উপজেলার ১০০ একর কৃষি জমি রক্ষার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতে ইতঃস্তত করবে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।