মোসাইদ রাহাত ::
শেষ হয়েছে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত উন্নয়ন মেলা। শহরের সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এ মেলা বুধবার রাতে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। এর আগে মেলার শেষ দিন উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই স্টলগুলোতে ছিল বিভিন্ন বিভাগের উন্নয়ন কার্যক্রমের উপস্থাপনা। ছিল মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের ভিড়। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় মেলার সমাপনী দিনের আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. নুরুজ্জামান আহমেদ। জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সহকারি কমিশনার মনিরুল হাসানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী মো. নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন বাংলাদেশের গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণতন্ত্র উন্নয়নের মূলমন্ত্র। দেশ পরিচালনায় তিনি উদ্ভাবন করেছেন নিজস্ব দর্শন ও চেতনা। নিজস্ব দর্শন ও চেতনায় বলিয়ান হয়ে তিনি দেশ পরিচালনায় সফলতার দীপশিখাকে উন্মোচন করে শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বে তিনি আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। শেখ হাসিনার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা এখনই দেখতে পাচ্ছি। আর এ ডিজিটালাইজেশনের কারণে তথ্য-প্রযুক্তি সফলতার জন্য আমাদের তরুণ সমাজের যে কর্মসংস্থান হয়েছে তা বলতে দ্বিধা নেই আগামী দিনে আমাদের সন্তানেরা বিগত দিনে যারা দেশ পরিচালনা করেছিল তাদের চেয়েও ভালো অবস্থান গড়ে তোলতে সক্ষম হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘বিগত দিনে দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে দেশের ও দেশের সাধারণ মানুষের সম্পদ লুট করে যারা বিশাল সম্পদের মালিক হয়েছেন তারা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন দেখে ঈর্ষান্বিত হচ্ছে। তারা চায় কিভাবে দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা যায়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মাধ্যমে তারা আমাদের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এবং নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের গণতন্ত্রকে বজায় রাখতে হবে। আপনারা যদি সুনামগঞ্জের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চান তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করে তার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখে তাকে সহযোগিতা করুন। অব্যশই তিনি সুনামগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি সুনামগঞ্জ জেলায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ আমার মন্ত্রণালয়ের আরো যে সকল সমাজকল্যাণের সুযোগ সুবিধা রয়েছে তা পুরোপুরিভাবে দেওয়ার বিষয়ে নজর রাখব।
প্রতিমন্ত্রী মো. নুরুজ্জামান আহমেদ আরো বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর তার সে স্বপ্ন আজ অনেকাংশেই বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন তরুণরা দেশের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করছে। আমরা এজন্যে বলি ‘তারুণ্য আসছে, বাংলাদেশ হাসছে’। ১৬ কোটি মানুষ আজ বোঝা নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশের মানুষকে আজ যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে শক্তিতে রূপ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের কাছে বিস্ময়। বাংলাদেশের এ উন্নয়ন দেখে আজ অন্যান্য দেশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরামর্শ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে শাসন করতে আসেননি, তিনি এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে এসেছেন এবং সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন সুন্দরের এবং সুন্দর আগামীর বাংলাদেশের। আসুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি এবং দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত করি।’
আলোচনা সভার শুরুতে হাই-টেক পার্ক সম্পর্কে উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজজামান।
আলোচনা শেষে তিনদিনব্যাপি মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত কুইজ ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তোলে দেয়া হয়। এছাড়াও দেয়া হয় মেলার সেরা স্টলের পুরস্কার। তিনদিনব্যাপী মেলায় ছিল ৬৮টি স্টল।