মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুরে অবস্থিত আর্টস্কুলের পাঠদান চলছে জরাজীর্ণ ভবনে। ছোট একটি ঘরে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কোন রকমে গাদাগাদি করে ক্লাস করছেন। উপযুক্ত পরিবেশ ও স্থান সংকুলানের অভাবে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
জানাগেছে, ১৯৯৫ সালে জগন্নাথপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে আর্টস্কুলের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে মাত্র ১০-১২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে আর্টস্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত চিত্রকর্ম শিখছে। আর্টস্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচালক ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রণব কুমার বণিক, কামরুজ্জামান জুয়েল, আলফু মিয়া, মুন্নি বেগম, আমিনুল হক ওয়েছ, শারমিন আক্তার অঞ্জু, জুনায়েদ আহমদ সজল। এর মধ্যে কামরুজ্জামান জুয়েল, আলফু মিয়া ও আমিনুল হক ওয়েছ যুক্তরাজ্যে আর্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। বর্তমানে আর্টস্কুলের পরিচালক হিসেবে প্রণব কুমার বণিক, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জুনায়েদ আহমদ, শিক্ষক পদে শিপা বেগম, কুশল রায় ও সাহরিন হোসেন দায়িত্ব পালন করছেন। জগন্নাথপুর আর্টস্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েশন শিল্পী রুহুল আমিন তারেক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রতেœশ্বর সূত্রধর ইতোমধ্যে চিত্রকর্মে এশিয়ান পুরস্কার লাভ করেছেন। এছাড়া মৃণাল বণিক নামের আরেক শিক্ষার্থী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পুরস্কার লাভ করেন। আগামীতে জগন্নাথপুর আর্টস্কুল থেকে আরো অনেক দেশসেরা নামিদামি চিত্রশিল্পী বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার আর্টস্কুলে শিক্ষাদান হয়ে থাকে। ২ বছর পরপর আর্টস্কুলের উদ্যোগে চিত্র প্রদর্শনী হয়ে থাকে। এছাড়া প্রতিটি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় দিবসে আর্টস্কুলের উদ্যোগে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গত ৩১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে জগন্নাথপুর আর্টস্কুলের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর আর্টস্কুলের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ আহমদ সজল জানান, স্থান সংকটের কারণে ছোট একটি ঘরে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীরা চিত্রকর্ম শিখছে। ছোট এ জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। দিনদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। কম জায়গায় বেশি শিক্ষার্থী হওয়ায় স্থান সংকুলান হচ্ছে না। তাছাড়া বৃষ্টি হলে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে যায়। তখন পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়। তাই সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যে একমাত্র চারুকলা বিষয়ক জগন্নাথপুর আর্টস্কুলের জন্য একটি নতুন ভবন জরুরি হয়ে পড়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চিত্রকর্ম শিক্ষাদানের লক্ষ্যে এ সংকট দূরীকরণে ব্যবস্থা নিতে তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান, জগন্নাথপুর আর্টস্কুল কর্তৃপক্ষ যদি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন, তাহলে তাদেরকে নতুন ভবন প্রদানে আমি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবো।