স্টাফ রিপোর্টার ::
সদ্য সমাপ্ত সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটপ্রদানের জন্য দেয়া টাকা ফেরত চাচ্ছেন পরাজিত অনেক সদস্যপ্রার্থী। কিছু কিছু ইউপি সদস্য টাকা নিয়েও ভোট না দেওয়ায় এখন তাদের কাছে সেই টাকা দাবি করছেন প্রার্থীর লোকজন। এ নিয়ে হুমকি-ধমকি-জিডির ঘটনাও ঘটছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদে সদস্য পদে যারা প্রচারণা, প্রভাব-প্রতিপত্তি ও টাকা-পয়সায় এগিয়ে ছিলেন জয়ী হতে তারা মরিয়া ছিলেন। কাক্সিক্ষত ভোট হিসেব করে তারা ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্যদের নির্দিষ্ট হারে টাকা দিয়েছিলেন। পরাজিত প্রার্থীদের ঘনিষ্ঠজনরা জানান, টাকা নিয়েও কথা রাখেননি অনেক ইউপি সদস্য।
১৫টি ওয়ার্ড এবং সংরক্ষিত ৫টি ওয়ার্ডে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন তাদের অনেকেই ইউপি সদস্যদের টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। টাকা দিয়ে অনেকে কৌশলে মোবাইলে রেকর্ড করে রেখেছিলেন। অনেকে আরো ভিন্ন কৌশলে টাকা বিতরণ করেছেন। কিন্তু নির্বাচন শেষে কাক্সিক্ষত ভোট না পাওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হন। পরাজিত প্রার্থীদের ঘনিষ্ঠজনরা সেই টাকা উদ্ধারের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করেছেন। ইউপি সদস্যদের ফোন করে এবং কৌশলে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
জানা গেছে, টাকা লেনদেনের কারণে দোয়ারাবাজার উপজেলার ১৩নং ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থীর লোকজন স্থানীয় ইউপি সদস্যদের টাকা ফেরত দেওয়ার হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে দোয়ারাবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তবে ইউপি সদস্যরা হুমকির বিষয়টি স্বীকার করলেও টাকা লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করেননি। অন্যদিকে পরাজিত প্রার্থীরা আইনের ভয়ে টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি।
এভাবে বিভিন্ন স্থানেই মেম্বারদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক মেম্বার ভয়ে টাকাও ফেরত দিয়ে গেছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে অভিজ্ঞ লোকজন জানান, ইউপি সদস্যরা টাকা ফেরত না দিলে কিছুদিন পরে রক্তারক্তি কান্ড ঘটতে পারে। এখন পরাজিত প্রার্থীরা নীরব থাকলেও কিছুদিন পরে তারা রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে পারেন।
দোয়ারাবাজারের ইউপি সদস্য মো. আব্দুল মতিন বলেন, আমার ইউনিয়নের চারজন মেম্বারকে ফোনে ভোট না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সবার পক্ষ থেকে আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। পরাজিত প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
দোয়ারাবাজার ১৩নং ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য প্রার্থী মো. নূরুল ইসলাম বলেন, যারা অভিযোগ করেছে তারা সবাই আমার ঘনিষ্ঠ লোক। আমার সঙ্গে তারা নির্বাচনের শুরু থেকেই ছিল। কিন্তু কেন তারা শেষ পর্যন্ত ভোট দিলনা আমি জানিনা। তাদের এই আচরণে আমার ভাতিজা ক্ষুব্ধ হয়ে আপনজন হিসেবে দাবি নিয়ে একটু রাগে কথা বলেছে। এটা অন্য কিছু নয়। মেম্বারদের সঙ্গে তার কোন আর্থিক লেন-দেন হয়নি বলে তিনি জানান।