আমাদের দেশে সরকারি পর্যায়ে গৃহপালিত পশুর চিকিৎসা কতটা অনিশ্চিত, তার অনাকাক্সিক্ষত নজির শাল্লা প্রাণিস¤পদ হাসপাতাল। অস্বীকার করা যাবে না যে, নীতি ও অবকাঠামোগত দিক থেকে রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতির অভাব নেই। শাল্লা প্রাণিস¤পদ হাসপাতাল কেবলই কাঠামো মাত্র। ভেতরে এর পুরোটাই ফাঁকা।
মঙ্গলবার দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদসূত্রে জানা গেছে, শাল্লা প্রাণিস¤পদ হাসপাতালে ডাক্তার ও অফিস সহকারি না থাকার ফলে লোকজন কোন ধরনের সেবা পাচ্ছেন না যেমন, তেমনি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটি লোকশূন্য থাকায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। গরু, ধান মাড়াই মেশিন, ধান ভাঙ্গানোর মেশিন, ঠেলাগাড়িসহ নানা জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখায় দিন দিন বেহাল হচ্ছে হাসপাতালটির পরিবেশ। এই হাসপাতালে ১১ জনের মধ্যে দুইজন কর্মরত আছেন, তাও আবার উপজেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা গত আড়াই মাস ধরে ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। কর্মকর্তা সংকটের মধ্যেও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে ও ফিল্ড এসিসট্যান্ট তার মূল দায়িত্ব বাদ দিয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে পাঠানোর ফলে পুরো হাসপাতালটি এখন জনবল শূন্য। দায়িত্বপ্রাপ্তরাও দায়িত্ব পালন না করে প্রতি মাসেই বেতন নিচ্ছেন। স্থানীয়রা এই হাসপাতালটিকে সাবেক পিয়নের বসতঘর মনে করেন বলে মন্তব্য করেছেন।
শাল্লা প্রাণিস¤পদ হাসপাতালে গৃহপালিত পশুর চিকিৎসার জন্য অন্তত একজন চিকিৎসক তো থাকতেই হবে। চিকিৎসকই যেখানে নেই, সেখানে সরকার থেকে পাওয়া প্রয়োজনীয় ওষুধ কোথায় যায়, এটা বোঝাও কঠিন নয়। এমন অবস্থায় বিনাচিকিৎসায় হাওরাঞ্চলের দরিদ্র্যজনগোষ্ঠীর গবাদিপশু মারা যাওয়ায় মনে হতে পারাটাই স্বাভাবিক। আমরা চাই, হাওরাঞ্চলের দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর স্বার্থে শাল্লা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হোক।