স্টাফ রিপোর্টার ::
বাজারে শীতকালীন সবজি পাওয়া যাচ্ছে প্রায় মাস খানেক ধরে। তবুও সবজির দাম কমেনি। সুনামগঞ্জ সীমান্তের যেসব গ্রামে প্রতি বছর সবজি চাষ হয় সেসব গ্রাম থেকে শীতকালীন আগাম সবজি এবার ভালো ফলন হয়েছে। চাষী ও ক্রেতারা বলছেন মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে বাজারে সবজির দাম কমছে না।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে জেলায় বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজারসহ জামালগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৫০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে। এ বছর সারা জেলায় সর্বমোট ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে বলে ওই সূত্র জানায়। চাষকৃত সবজির মধ্যে রয়েছে লাল শাক, ডুগি শাক, ডুগি, লাউ, কুমড়া, শিম, মূলা, ফুল কপি, পাতা কপিসহ নানা প্রজাতির সবজি চাষ হয়েছে। এসব সবজির মধ্যে অনেক প্রজাতিই ইতোমধ্যে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। পাইকার ও এক শ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগীরা এলাকা থেকে গিয়ে সবজি কিনে নিয়ে এসে বাজারে তারা কয়েকগুণ দামে বিক্রি করছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষীরা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একটি ছোট লাউয়ের দাম সর্বনি¤œ ৫০ টাকা। শিম ৮০-১০০টাকা কেজি। ফুলকপি ও পাতা কপি ৮০ টাকা কেজি। লাল শাক ৫ টাকা আঁটি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। তবে পাইকাররা ওই এলাকা থেকে সবজি কিনে নিয়ে আসার পর বাজারে কেনা দামের চেয়ে তিনগুণ বেশি বিক্রি করছেন তারা।
চাষীরা জানিয়েছেন, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সরাসরি সবজি শহরে নিয়ে আসতে না পারায় মধ্যস্বত্বভোগী পাইকাররা সবজি ক্ষেত থেকেই কম মূল্যে সবজি ক্রয় করছেন। তাছাড়া স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মীরা মাঠে না যাওয়ায় মূল্যবান পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। এতে মৌসুমে নানা পোকামাকড় ও মড়ক তাদের ফসলের ক্ষতি করছে।
নারায়ণতলা এলাকার সবজি চাষী রমজান আলী বলেন, আমরা পাইকারদের কাছে একটি লাউ ১৫-২০ টাকায় বিক্রি করি। তারা এই লাউ ৫০টাকার নিচে বিক্রি করে না। মৌসুমে অপর্যাপ্ত সার ও কীটনাশকের অভাব এবং কৃষি অফিসের অসহায়তার কারণে কৃষকদের নানা সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আব্দুল হাই বলেন, আমাদের এলাকায় সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ হয়। এবছরও ভালো চাষ হয়েছে। কিন্তু আমাদের কৃষকরা কৃষি অফিসের লোকদের কোন সহায়তা ও পরামর্শ পায় না। তাছাড়া মওসুমে এক শ্রেণির পাইকার ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে চাষীরা ভালো দাম পায় না। যার ফলে বাজারেও এর প্রভাব পড়ে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাহেদুল হক বলেন, এবছর শীতকালীন সবজি ভালো চাষ হয়েছে। কৃষকরা সেই সবজি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে যায়না- কৃষকের এই অভিযোগের বিষয়টি তিনি আংশিক স্বীকার করে বলেন, লোকবল সংকটের কারণে আমাদের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সবস্থানে নিয়মিত যেতে পারেন না। তবে কৃষকদের নানাভাবে তারা সবজি চাষে পরামর্শ দিচ্ছেন বলে তিনি জানেননা।