বিশেষ প্রতিনিধি ::
দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় রাজনীতিতে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নয়া মেরুকরণ দেখা দিয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানকেও তাদের কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে।
জানা গেছে, গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আয়ূব বখ্ত জগলুল বিভিন্ন ইস্যুতে কাছাকাছি চলে আসেন। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন দায়িত্ব পাবার পর এই দুই নেতা আরও কাছাকাছি চলে আসেন।
গত ১৫ আগস্টের অনুষ্ঠান তারা ঐক্যবদ্ধভাবে বিভিন্ন স্থানে পালন করেন। শোকর্যালিতে নুরুল হুদা মুকুট ও আয়ূব বখত জগলুল নেতৃত্ব দেন। ওইদিন জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে প্রেসক্লাবের সামনের মাঠে শোকদিবস অনুষ্ঠানে নানা জল্পনা-কল্পনার পর মতিউর রহমান অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, গত ২২-২৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে সুনামগঞ্জ থেকে জাতীয় পরিষদ সদস্য অন্তর্ভুক্তি নিয়ে গ্রুপিং দেখা দেয়। ওই সময় নুরুল হুদা মুকুট ও আয়ূব বখ্ত জগলুলসহ তাদের নেতৃত্বাধীন বলয় ঐক্যবদ্ধ হয়ে আয়ূব বখ্ত জগলুলকে জাতীয় পরিষদ সদস্য মনোনয়নের জন্য তদবির করেন। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা আয়ূব বখ্ত জগলুলকে জাতীয় পরিষদ সদস্য মনোনীত করেন।
আয়ূব বখ্ত জগলুল জাতীয় পরিষদ সদস্য মনোনীত হওয়ার পর তাকে সংবর্ধনা প্রদান করে স্থানীয় পৌর আওয়ামী লীগ। ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নুরুল হুদা মুকুট।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসেও এই দুই নেতা একই মঞ্চে কর্মসূচি পালন করেন। ওই মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান থাকার কথা থাকলেও তিনি দিরাইয়ে পৃথক একটি কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এদিকে গত ৫ নভেম্বর আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংবর্ধনা প্রদান করেন আয়ূব বখ্ত জগলুল। ওই সভায় তিনি উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদেরকে নুরুল হুদা মুকুটকে আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোটপ্রদানের অনুরোধ জানান।
এদিকে জেলার দুই প্রভাবশালী নেতা বৈরিতা ভুলে একই মঞ্চে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও উজ্জীবিত।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুট ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আয়ূব বখ্ত জগলুল বলেছেন, দলের স্বার্থেই আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। তৃণমূল আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে একটি সুসংগঠিত দল উপহার দিতে চাই।