1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১০:১০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বাম্পার ফলন : আমনে ফিরেছে কৃষকের হাসি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৬

মো. আমিনুল ইসলাম ::
সোনালী রঙের পরশ চারদিকে। দিগন্তজোড়া ধানের মাঠে সবুজের আবরণ পাল্টে লেগেছে সোনারঙ। সেখানে বাতাসের দোল। ভাসছে পাকা ধানের গন্ধ। আর কৃষকের মনে খেলছে আনন্দ। জেলায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে আমন ধানের। চলতি বছর বোরো ধান হারানো কৃষকদের মুখে এই আমন ধানই ফিরিয়ে দিয়েছে হাসি। ফসল ঘরে তোলতে ধানের মাঠে তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন সুনামগঞ্জের কৃষকরা।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে শিলা, জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে হাজার হাজার হেক্টর বোরো ধান কৃষকের চোখের সামনেই তলিয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষক। উঁচু জমির ইরিধানও রেহাই পায়নি। তিনভাগের মধ্যে দুই ভাগেরও বেশি বোরো ফসল হারান কৃষক। ওই সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছিল জেলার বিভিন্ন হাওরের মোট ৩৩ হাজার হেক্টরের বোরো জমির ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু কৃষক ও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছিলেন এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। তবে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর আমন ধানের ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়েছে। এতে কৃষকদের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। উপজেলাগুলোতে কাটা শুরু হয়েছে পাকা আমন ধান। গত কয়েক বছরের আগাম বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে আমনের ফলন ভাল হওয়ায় এবছর জেলার কৃষকদের পরিশ্রম বিফলে যায়নি বলে উল্লেখ করেছেন স্থানীয়রা। এবছর ধানের ভালো দাম পাবেন বলেও আশা করছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রমতে, সুনামগঞ্জে এবার ৬৯ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে আমন ধান। যা গত বছরের তুলনায় ২৫ হাজার হেক্টর বেশি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হল ১ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে জেলার দোয়ারাবাজার, জগন্নাথপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও ছাতক উপজেলায় আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। চাষকৃত ধানের মধ্যে বিআর ১১, বিআর ২২, বিআর ২৩, বিনা ৭, বি-ধান ৫১-৫২ জাতের ধানই বেশি চাষ করেছেন কৃষকরা। এবছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান।
কৃষকরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া ভাল হওয়ায় এবছর আমনের ফলন অন্যান্যবারের তুলনায় ভালো হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুরের কারেন্টের বাজার এলাকার এক কৃষক সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আমরা গতবারে তেমন ধান পাইছি না। অনেকেই লোকসান করছে। যে টেকা গেছে সেইটাই তুলতে না পাইরা অনেকে লস খাইছে। এইবার আল্লায় দিলে সব দিকেই ভালা ধান হইছে’।
ডাবর এলাকার এক কৃষক রজব আলী বলেন, ‘আমরা বিনা সেভেন জাতের ধান লাগাইছিলাম, গতবারের চেয়ে অনেক ধান পাইছি। ধানক্ষেতে কামলা লাগাইয়া কাটা চলছে। সবের রোজ দিয়া যদি ভালা দাম পাই তাইলে এইবার লাভ ওইবো’।
কৃষক তোফাজ্জল মিয়া বলেন, ‘এই বছর ঠিক টাইমে বৃষ্টি হইছে, আবহাওয়াও ভালা আছিল। বীজও ভালা পাইছি। এর লাগি ধানও বাম্পার হইসে’।
কথা হয় কৃষক বশির মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, বোরো ধান একটাও ঘরে তুলতাম পারছি না। এইবার আমন ধান ঘরো তুলতে পারলেই হয়। আরেকবার ক্ষতি হইলে পথে বইতে হইবো।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাহেদুল হক বলেন, ‘উৎসব আমেজে জেলায় আমন ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো জাতের ও উচ্চ ফলনশীল বীজ হওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে কৃষকরা আমন চাষাবাদ করেছেন। সব এলাকায় কম বেশ আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে আরও কিছুদিনের মধ্যে সব ধান কাটা শুরু হবে। আশা করছি এবছর কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com