বিশেষ প্রতিনিধি ::
জেলা পরিষদ নির্বাচনে তোড়জোড় শুরু হওয়ার পর রাজনীতিতে সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় আছেন এমন তরুণদেরকেই সদস্যপদে প্রার্থীর জন্য দৌড়ঝাপ করতে দেখা যাচ্ছে। ১৫টি ওয়ার্ডে প্রায় শতাধিক তরুণ নানাভাবে প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে। তারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মহিলা মেম্বারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। মাঠে যারা রাজনীতি ও সমাজসেবায় সক্রিয় রয়েছেন সেই তরুণদের অনেকেই ইতোমধ্যে পোস্টার, বিলবোর্ডসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জে ১৫টি ওয়ার্ড বিন্যাস করা হয়েছে। এই ১৫টি ওয়ার্ডে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে সদস্যপদে ২০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। এই পদে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে ইতোমধ্যে প্রায় শতাধিক তরুণ প্রার্থীকে প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে। জানা গেছে, তরুণদের প্রচারের আলোয় সদস্যপদে প্রবীণদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্যপদে ৪নং ওয়ার্ডে (জামালগঞ্জ) তরুণ প্রার্থীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট নাসিরুল হক আফিন্দী, অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক, সাবেক যুবলীগ নেতা রেন্টু সরকার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাজিব তালুকদার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সায়েম পাঠানের নাম শোনা যাচ্ছে। এই তরুণরা এলাকার রাজনীতিতে সক্রিয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকেন। ৫নং ওয়ার্ড (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) তরুণ প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. বুরহান উদ্দিন, মো. আখলাকুর রহমান, ফারুক রশিদ, হাসান বশিরসহ একাধিকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। ৬নং ওয়ার্ডে (সুনামগঞ্জ পৌরসভা ও সদর) সদস্যপদে রয়েছেন একঝাঁক রাজনৈতিক তরুণ তারকা প্রতিনিধি। তারা হলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ অপু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দাউদ পীর, মাজহারুল ইসলাম উকিল প্রমুখ। তবে তাদের সঙ্গে কয়েকজন সিনিয়র রাজনীতিবিদের নামও শোনা যাচ্ছে। এই এলাকার সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসি সিদ্দিকা আলোচনায় রয়েছেন। তিনি ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে তাদের সমর্থন কামনা করেছেন। এছাড়া যুব মহিলা লীগ নেত্রী সানজিদা আক্তার, সেলিনা আবেদীন, সামিনা চৌধুরী মনি’র নামও আলোচনায় রয়েছে।
৭নং ওয়ার্ডে (দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) জাহাঙ্গীর আলম, জহিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট বুরহান উদ্দিনের নাম শোনা যাচ্ছে।
১০নং ওয়ার্ড (জগন্নাথপুরে) আবুল হোসেন লালন, শিব্বির আহমদ ওসমানী, আব্দুল জব্বারসহ একাধিক তরুণ প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
১৩নং ওয়ার্ডে (দোয়ারাবাজার) তরুণ প্রার্থী হিসেবে সাংবাদিক হাবীবুল্লাহ হেলালী প্রচারণায় আছেন।
১৪নং ওয়ার্ড (ছাতক) শাহীন চৌধুরী, আজমল হোসেন সজল, সাহেদুর রহমান, আলী আহমদ, স্থানীয় সাংসদ মহিবুর রহমান মানিকের ব্যক্তিগত সহকারি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রশিদ আহমদ আলোচনায় রয়েছেন। এই উপজেলার সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশিদা বেগম ন্যান্সি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুলের স্ত্রী নূরুন্নাহার চৌধুরী চিনুর নাম শোনা যাচ্ছে।
২নং ওয়ার্ডে (ধর্মপাশা) তরুণ প্রার্থী শাহ আবদুল বারেক ছোটন ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোকারম হোসেনসহ কয়েকজন তরুণ প্রার্থী মাঠে আছেন। এই উপজেলার ৩নং ওয়ার্ডে সাবেক চেয়ারম্যান প্রভাকর তালুকদার পান্না, মোজাম্মেল হক রোকনসহ আরো কয়েকজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
১নং ওয়ার্ডে (তাহিরপুর) তরুণ প্রার্থীদের মধ্যে মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, আতিকুর রহমান আতিক, এনামুল হক এনাম, অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজ আলী পীরের নাম শোনা যাচ্ছে।
এভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডেই একাধিক তরুণ প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের অনেকেই স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ইতোমধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছেন। একাধিকবার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে গিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। অনেক প্রার্থী স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আত্মীয়তা খুঁজেও তাদের সমর্থন চাইছেন।
৬নং ওয়ার্ডে সদস্য প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ অপু বলেন, গত দুই দশক আগে ছাত্র রাজনীতি দিয়ে শুরু করেছিলাম। এখন পরিণত যৌবনে এসেও তারুণ্যের সেই স্পর্ধাকে বুকে লালন করে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছি। রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে রয়েছে আমার গভীর সম্পর্ক। আমি ইতোমধ্যে আমার ওয়ার্ডের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সমর্থন চেয়েছি। তারা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।
সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ফেরদৌসী সিদ্দিকা বলেন, আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ উপহার দিয়ে গেছেন। তার সেই স্বপ্নের দেশকে এগিয়ে নিতে তারুণ্যের দুর্বার শক্তির প্রয়োজন। আমি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নির্বাচিত প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রচারণায় নেমেছি। স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাদের সাবেক প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে মূল্যায়ন করছেন। তারা অনেকেই আমাকে সমর্থন দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।