1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নিষিদ্ধ পলিথিনে বাজার সয়লাব

  • আপডেট সময় রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৬

মো. আমিনুল ইসলাম ::
চাল, ডাল আর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের খুচরা বাজারে এখন ক্রেতাদের কেনা পণ্যটির সঙ্গে হাতে তোলে দেয়া হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ। এসব পলিথিনের রাজত্ব কেবল এখানেই সীমাবদ্ধ নয় বরং দখল করে রেখেছে পাইকারি অধিকাংশ পণ্যসামগ্রী আর তরিতরকারির কাঁচাবাজারও। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও মাটির উর্বরতা ধ্বংসকারী এসব পলিথিনব্যাগ সরবরাহ ও ক্রয়-বিক্রয়সহ ব্যবহারের উপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অবাধে তা ব্যবহৃত হচ্ছে সুনামগঞ্জে। শহরের অধিকাংশ বাজারে ক্রেতাদেরকে পলিথিন ব্যাগে করে সরবরাহ করা হচ্ছে ক্রয়কৃত পণ্যটি। নিষিদ্ধ এ পলিথিনে শহরের বাজারসহ বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজার এখন সয়লাব।
এক সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ এসব পলিথিন ব্যাগের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হলেও বর্তমানে কমেছে তদারকরির মাত্রা। অনেক দোকানি অনেকটা প্রকাশ্যেই ব্যবহার করছেন নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ। বাজারভিন্নতায় সর্বত্রই চোখে পড়ছে নিষিদ্ধ পলিথিনের ছোট-বড় আকারের ব্যাগের ছড়াছড়ি।
সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, জেলা শহরের অধিকাংশ দোকান বিশেষ করে মসলা, চাল, ডাল, আটা-ময়দা, ডিম বিক্রির দোকান, মাছ বাজার, সবজির বাজারগুলোতে পলিথিনের ব্যবহার যত্রতত্র। কম মূল্যের পণ্য কিনলেও অনেকটা অঘোষিত নিয়মে পলিথিন ব্যাগে পণ্য ঢুকিয়ে ক্রেতার হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। যা সহজতর উপায়েই বহন করতে হচ্ছে ক্রেতাদেরকে।
একটি সূত্র জানায়, শুধু সুনামগঞ্জ শহরের বাজারগুলোতেই প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ কেজি পলিব্যাগের চাহিদা রয়েছে। এসব পলিথিনের মধ্যে রয়েছে প্যাকেট ব্যাগ ও হ্যান্ডব্যাগ। গতকাল রোববার শহরের জগন্নাথবাড়ি এলাকার একটি দোকানে গিয়ে দেখা যায়, পলিথিন বিকি-কিনি চলছে। ওই দোকানি জানান, খুচরাভাবে একটি প্যাকেটে ৩০ থেকে ৩৫টি পলিথিন (হ্যান্ডব্যাগ) থাকে। পাইকারির হিসাব আলাদা। তিনি জানান, আগের চেয়ে এখন বিকি-কিনি বেড়েছে। নিষিদ্ধ হলেও বিক্রি করছেন কেন জিজ্ঞেস করলে, তিনি আর কথা বলতে রাজি হননি।
এক মুদি দোকানি বলেন, আমরা পলিথিন খুব একটা ব্যবহার করি না। তবে কাস্টমাররা মাঝে মাঝে চায়, তাই দিতে হয়। মালের সাথে পলিথিন ব্যাগ দিলে কাস্টমারদের নিতে সুবিধা হয়।
এদিকে, পলিথিনের এমন যথেচ্ছ ব্যবহারের ভবিষ্যৎ ভয়ানক বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মলয় চক্রবর্ত্রী রাজু বলেন, পলিথিন পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পলিথিন শুধু যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে তা নয়, এটি নদী, খাল, বিলের তলদেশে নানা সময়ে নানা ধরনের প্রাণির জীবনহানি ঘটাচ্ছে। পলিথিন যখন নদী-খালের তলদেশে গিয়ে জমা হতে থাকে, তখন তার সঙ্গে পলি জমে জমে বালির বস্তায় পরিণত হয় এবং খাল কিংবা নদীর প্রবেশপথ আটকে দেয়। পলিথিন মাটির উর্বরতা নষ্ট করে দেয় এবং এটি কয়েক যুগ পরেও মাটির নিচে যেমন ছিল তেমনি থেকে যায়। নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে তিনি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজজামান বলেন, পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা কোনভাবেই উচিত নয়। এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বাজারে পলিথিন ব্যাগ সরবরাহকারি ও ব্যবহারকারি দোকানিদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করে থাকি। এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসনের পক্ষথেকে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে নিষিদ্ধ হওয়ার পর জোরালো অভিযান ও আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে পলিথিনের ব্যবহার প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (সংশোধিত) ২০০২ অনুযায়ী, এই আইন অমান্য করলে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। আর বাজারজাত করলে ৬ মাসের জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com