বিশেষ প্রতিনিধি ::
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক, স্বাধীন বাংলার প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ। বাংলাদেশের একজন তুখোড় রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি সারা জীবন দেশ এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। দেশের সার্বিক অগ্রযাত্রা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে তাঁর অবদান কখনো ভুলার নয়।
বাবার পথ ধরেই রাজনীতিতে এসেছিলেন আজিজুস সামাদ ডন। তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগও ছিল। সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে শক্ত টক্করও দিয়েছেন। দেশ ও দলের জন্য পিতার ত্যাগের প্রতিদান হিসেবে আশা ছিল কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন। কিন্তু ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েনি। দেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা হয়নি আজিজুস সামাদ ডনের।
নেতাকর্মীদের মতে, প্রয়াত জাতীয় সব নেতার সন্তানদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভাল অবস্থান। এর মধ্যেই অনেকেই এখন প্রভাবশালী মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। আশা ছিল এবার আজিজুস সামাদ ডনকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিবেন দলীয় সভাপতি। জাতীয় সম্মেলনের অনেক আগে থেকেই সক্রিয় ছিলেন ডন। কিন্তু গতবারের মত এবারও এই প্রয়াত জাতীয় নেতার ছেলের স্থান হয়নি আওয়ামী লীগের মূল কমিটিতে।
ডন এর আগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ সম্পাদক ছিলেন। তার স্ত্রী মুমতাহিনা রিতু উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিন দফা কমিটির ঘোষণার পর ডনের নাম না আসায় তার শুভাকাক্সিক্ষ ও অনুসারীরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
জেলা ছাত্রলীগের সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী টিংকু তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, জানি না নেত্রী কি করবেন। জাতীয় নেতা মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ সাহেবের সুযোগ্য পুত্র আজিজুস সামাদ ডন ভাইকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিবেন কি না। তবে এই টুকু একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে বলতে পারি, যদি চারপাশের ষড়যন্ত্রের কারণে আজিজুস সামাদ ডন ভাইকে কেন্দ্রীয় কমিটির বাহিরে রাখা হয়, তাহলে তাকে তাঁর প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হবে। আমার বিশ্বাস সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে, আমাদের নেত্রী আজিজুস সামাদ ডন ভাইকে মূল্যায়ন করবেন।
আসাদ আবেদীন নামের এক ছাত্রলীগ নেতা লিখেছেন, নেত্রী আমাদের আবার হতাশ করলেন।
ফ্রান্স প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন ফারুক ফেসবুকে লিখেছেন, ১৯৭৫-এর নির্মম হত্যাকান্ড, ৩ নভেম্বর জেলহত্যা পরবর্তী চরম ক্রান্তিকালে জননেতা আব্দুস সামাদ খন্ড-বিখন্ড আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনে যে নিরলস সময় ও শ্রম দিয়েছেন তা কোনো দিনও বিস্মৃত হবার নয়। চট্টগ্রামের মেয়র এবিএম মহি উদ্দিন চৌধুরী সাহেবের ছেলে যদি উত্তরাধিকার রাজনীতির জন্যে পুরস্কৃত হয় তাতে নিরানন্দ হবার কারণ নেই। বরং এটাই সঠিক মূল্যায়ন। আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ সাহেবের পুত্র কি উত্তরাধিকার হিসাবে কোনো পদায়নের অগ্রাধিকারী নয়?
তবে আজিজুস সামাদ ডনের স্ত্রী মুমতাহিনা রিতু হতাশ না হয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, রাজনীতি একটা চলমান প্রক্রিয়া, এর শুরু আছে শেষ নেই।