সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
গাজীপুরের পাতারটেকে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত সাতজনের মধ্যে দুইজনের পরিবার যোগাযোগ করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, এ নিয়ে মোট তিনজনের পরিচয় জানতে পেরেছেন তারা।
তিনি বলেন, নিহতদের যে ছবি পুলিশের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়েছিল, তা দেখে দুই জনের পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে।
ওই দুজন হলেন- ছাতকের সাইফুল ইসলাম বাবুল ও ঢাকার বংশাল থানার মোগলটুলি এলাকার আজিমউদ্দিনের ছেলে ইব্রাহিম। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নব্য জেএমবির নেতা ফরিদুল ইসলাম আকাশ রয়েছেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
নিহতরা সবাই গুলশানে হামলাকারীদের দল নব্য জেএমবি’র সদস্য বলেও অভিযানের দিন জানান তিনি।
শনিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার নোয়াগাঁওয়ের আফারখোলা পাতারটেকের ওই বাড়িতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও সোয়াটের অভিযানে ওই সাতজন নিহত হয়।
এরপর রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের ফেসবুক পাতায় নিহতদের ছবি প্রকাশ করে তাদের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
সেখানে বলা হয়, “জঙ্গি অভিযান ও তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে আমরা দেখেছি, জঙ্গিরা বিভিন্ন সময়ে ও বিভিন্ন স্থানে একাধিক ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করে থাকে। তদন্তের স্বার্থে তাদের প্রকৃত পরিচয় জানা জরুরি।”
সেই ছবি দেখে মঙ্গলবার গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আসেন ইব্রাহিমের বাবা আজিমউদ্দিন, যিনি ঢাকায় একটি আবাসন নির্মাতা কো¤পানিতে কাজ করেন। পুলিশকে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইব্রাহিম পড়ালেখা করেছেন তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায়। গত ৮ আগস্ট ভোরে বাসা থেকে নামাজ পড়তে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি তিনি। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে পরদিন বংশাল থানায় একটি জিডিও করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।
আজিমউদ্দিন বলেন, “চেয়েছিলাম আমার ছেলে মস্ত বড় আলেম হবে। কিন্তু মোবাইল ফোন আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সে যে মৌলবাদী গোষ্ঠীতে জড়িয়ে পড়েছে তা আমরা বুঝতে পারিনি। জঙ্গিবাদে যোগ দিয়ে প্রাণ দিয়েছে ইব্রাহিম।”
পুলিশ সাতজনের যে ছবি প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে তিন নম্বর ছবিটি ইব্রাহিমের বলে জানান তার বাবা।
পুলিশ সুপার জানান, ছাতকের সাইফুল ইসলাম বাবুলের পরিবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং তারা গাজীপুরে আসছেন বলে জানিয়েছেন।
“পরিবারের দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন তিনি।
ওই সাতজনের মধ্যে বাবুলের ছবি কোনটি, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি হারুন অর রশীদ। তাদের মধ্যে আকাশ কে, তাও পুলিশ প্রকাশ করেনি।
তবে সিরাজগঞ্জ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কাজিপুর উপজেলার গান্ধাইল ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ইতলী গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে ফরিদুল ইসলাম আকাশ (২৫) এক বছর আগে নিখোঁজ হন। গত ৫ সেপ্টেম্বরে আকাশের মা, দুই বোন এবং প্রতিবেশী এক নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা ‘জেএমবির আত্মঘাতী দলের’ সদস্য। আর আকাশের বাবা আবু সাঈদ সাত-আট বছর বয়সী এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ‘গা-ঢাকা দিয়ে আছেন’ বলে সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ওয়াহেদুজ্জামান জানান।