সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
নির্বাচিত কোনো জনপ্রতিনিধি পদ থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। নির্বাচনের জন্য তাদের পদত্যাগ করতে হবে। আর নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার চার্জশিট গ্রহণ হলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারবে মন্ত্রণালয়। এসব বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন-২০১৬’ পাস হয়েছে।
বৃহ¯পতিবার বিকেলে সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। পরে তা পাস হয়।
বিলে বলা হয়েছে, জেলা পরিষদ হবে ২১ সদস্যের। এর মধ্যে একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও ৫ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকবেন। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভোটে তারা নির্বাচিত হবেন।
বিলে আয়তন ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলা পরিষদকে ১৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একভাগে একজন করে সদস্য ও প্রতি তিনটি ভাগে একজন করে সদস্য সংরক্ষিত আসন বিবেচনায় নির্বাচিত হবেন।
এছাড়া বিলের ৬ ধারার ‘চ’ উপধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বর্তমান প্রশাসক এবং নির্বাচিত এমপিসহ অন্যান্যদের বর্তমান পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। আর ১০ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, জেলা পরিষদের কোনো সদস্য ফৌজদারি মামলায় চার্জশিটভুক্ত হলে তিনি বরখাস্ত হবেন।
বিলে আরো বলা হয়েছে, জেলা পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে চেয়ারম্যানের কাছে। তবে তার অনুপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের মধ্যে থেকে একজন বা সরকারি কর্মকর্তারাও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সরকার গেজেট করে সরকারি কোনো কর্মকর্তাকেও এ দায়িত্ব দিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ আগস্ট জেলা পরিষদ (সংশোধন) বিল অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। আইন পাসের পর ডিসেম্বর মাসে জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে এ আইনের অধীন নির্বাচনী বিধিমালা তৈরির কাজ শুরু করেছে। দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের সীমানা নির্ধারণের কাজও শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ স¤পর্কে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, জেলা পরিষদ আইনটি ২০০০ সালে প্রণীত হয়। ইতোমধ্যে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছে এবং জেলা পরিষদ ব্যতীত অন্য সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচন স¤পন্ন করার দাবি উত্থাপিত হয়ে আসছে। নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা জেলা পরিষদগুলো পরিচালিত হলে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার সফল বাস্তবায়ন হবে। বিদ্যমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এনে জেলা পরিষদ আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।