সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সাবেক রাষ্ট্রপাতি ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ বলেছেন, বিএনপি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তারা আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
সোমবার সন্ধ্যায় রংপুরে নিজ বাসভবন পল্লী নিবাসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
এরশাদ বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে আমার এবং দলের ওপর যে অন্যায় করেছে, আজ তারই খেসারত দিতে হচ্ছে। প্রকৃতি প্রদত্ত শাস্তি ভোগ করছে। বিএনপি আর যাই করুক, কোনো দিন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা কারাগারে। তাদের ভুল রাজনীতির কারণে তারা নিজেরাই শেষ হতে চলেছে। তাদের অস্তিত্ব এখন সংকটে। মামলার ভয়ে নেতাকর্মী শূন্য হয়ে পড়েছে দলটি।’
বিএনপি’র শাসন আমলকে তার জীবনের বিভীষিকাময় স্মৃতি উল্লেখ করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ওই সময় আমাকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমার দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালাতে দেয়া হয়নি। সে সময় দলের নেতাকর্মীদের ওপর চরম দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। কোনো সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিএনপির আমল ছিল জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-অত্যাচারের আমল। বিএনপি শুধু দলের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার করেছে তা নয়, তারা আমার ওপর ব্যক্তিগতভাবেও অত্যাচার করেছে।’
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে রাজনৈতিক কর্মসূচি পানল করতে দেয়া হয়নি। ১৪৪ ধারা জারি করে সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।’
দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা কিংবা ইঙ্গিত নেই জানিয়ে তিনি বলেন, মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য নয়, দল গোছাতেই সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনী প্রচারণার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
বর্তমান সরকারের নানা বিষয়ে সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, বর্তমান সরকার অনেক ভাল কাজ করেছে। আবার অনেক মন্দ কাজ করেছে। সরকার চালাতে গিয়ে এ রকম নানা ঘটনা ঘটতে পারে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আমলে জাতীয় পার্টি তার দলীয় কাজ স্বাধীনভাবে করতে পারছে। আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগতভাবে শক্তি অর্জন করে নির্বাচনী যাত্রায় জয়যুক্ত হতেই আগে থেকেই সিলেটের পুণ্যভূমি থেকে দলের প্রচারণার কাজ শুরু করেছি।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি কোনো মধ্যবর্তী নির্বাচনের ইঙ্গিত নয়। দীর্ঘ ২৬ বছর ক্ষমতার বাইরে আছি দলের নেতাকর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি ও দলকে আরও শক্তিশালী করতেই এই প্রচার অভিযান।’
তিনি বলেন, ‘সিলেট ও রংপুরের মানুষের জন্য জাতীয় পার্টি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। আমি জীবন পেয়েছি। তার আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’
এ সময় এরশাদ আবেগতাড়িত হয়ে নিজের শাসন আমলের ভালো দিকগুলো উল্লেখ করে বলেন, ‘অনেকে আমার শাসন আমলের নানা সমালোচনা করেন। দেশ শাসন করতে গেলে ভালো কাজ হবে। কারও কারও কাছে কিছু কাজ মন্দ হতে পারে। সেটি তাদের চিন্তা ভাবনা, তা হতেই পারে।’
এসময় জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ আখতার, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা জাপার সদস্য সচিব সাবেক এমপি হুসেইন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর জাপার আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সদস্য সচিব এসএম ইয়াসির, মজিদা খাতুন মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ শরিফুজ্জামান বুলু ও সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ স¤পাদক রায়হানুর রহমানসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।