বিশেষ প্রতিনিধি ::
উৎসবমুখর পরিবেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রায় দেড় যুগ পর চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। নানা নাটকীয়তা, প্রতিবন্ধকতা ও উত্তেজনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার প্রায় ৭ মাস পার হতে চললেও এখনো হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। কবে কমিটি হবে তারও কোন স্পষ্ট খবর নেই। তবে দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটির একটি খসড়া প্রস্তুত রয়েছে। তবে পদ-পদবী বঞ্চিতরা বিক্ষোভ করতে পারে এবং এ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এই আশঙ্কায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করছেন না।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, যারা গত সম্মেলনে পদ-পদবী থেকে বঞ্চিত হয়েছেন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তারা ঠাঁই না পেলে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ করবেন। এ জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন। সম্প্রতি নানা ইস্যু নিয়ে শহরে তাদের ঐক্যবদ্ধ শোডাউন দেখা গেছে।
এদিকে পদপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই এখন সভাপতি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনের সঙ্গ নিয়েছেন। প্রত্যাশিত পদ পেতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মন জয়ের চেষ্টায় ব্যস্ত রয়েছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিগুলোতে তারা এখন উপস্থিত হতে রীতিমতো কাড়াকাড়ি করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দুই শীর্ষনেতার বন্দনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন। যারা এতদিন এই দুই নেতার বিরোধিতা করতেন তারাও পদের জন্য তাদের গুণকীর্তন করছেন। যেভাবেই হোক তারা কমিটিতে পদ চান বলে জানা গেছে।
জেলা কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, জেলা আ.লীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন, দলের পরীক্ষিত এবং ত্যাগী নেতা। আমাদেরও এই দুই নেতার উপর আস্থা রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি যারা প্রতিটি আন্দোলনে দলের জন্য সংগ্রাম করে নির্যাতিত হয়েছেন তাদের মূল্যায়ন করা হবে। এই দুই নেতা আওয়ামী লীগের দুর্দিনের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের নিয়েই একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি উপহার দিবেন বলে আমরা আশাবাদী।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, নেত্রী যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আমাদের নেতৃত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করেছেন তাঁর এই মূল্যায়ন শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও রক্ষা করবো। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আদর্শ ও উন্নয়ন দর্শন তৃণমূলে ছড়িয়ে দিতে আমরা ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি নেত্রীকে উপহার দিব। এই কমিটি জেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করবে। রাজপথে সক্রিয় থেকে বিপদে-আপদে আওয়ামী লীগের ঝান্ডা উঁচিয়ে ধরবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগেই কমিটি ঘোষণা করা হবে। যারা দীর্ঘদিন দলের সঙ্গে সক্রিয় আছেন তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে বলে তিনি জানান।