সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আদালত নিয়ে মন্তব্য করে অবমাননার দায়ে দন্ডিত দুই মন্ত্রী তাদের ‘সংবিধান রক্ষার শপথ ভেঙেছেন’ বলে জানিয়েছে আপিল বিভাগ।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে ছয় মাস আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে সাজা দিয়েছিল, সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এর উল্লেখ করেছে সর্বোচ্চ আদালত।
যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায়ের আগে সর্বোচ্চ আদালতকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য দুই মন্ত্রীর নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগ গত ২৭ মার্চ ওই রায় দেয়। সেই রায় বৃহ¯পতিবার আপিল বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
রায়ে বলা হয়, “সংবিধানে বর্ণিত আইনের শাসন রক্ষার যে শপথ বিবাদীরা নিয়েছেন, সেই দায়িত্বের প্রতি তারা অবহেলা করেছেন। তারা আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং সংবিধান রক্ষা ও সংরক্ষণে তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন।”
সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে হওয়া এই রায় লিখেছেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
এর মধ্যে বিচারপতি ইমান আলীর সঙ্গে অপর চার বিচারপতি একমত পোষণ করায় তার লেখা রায়ই আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার রায়ের বিষয়ে বিচারপতি ইমান আলীর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
অন্যদিকে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মো. নিজামুল হক।
বিচারপতি সিদ্দিকী তার রায়ে বলেছেন, “আমি আমার ভাই মোহাম্মদ ইমান আলীর রায় পড়েছি। অবমাননাকারীদের দোষী সাব্যস্ত করা এবং তাদেরকে দেওয়া দন্ডের বিষয়ে দ্বিমত পোষণের কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না। তবে অবমাননাকারীদের শপথ লঙ্ঘন বিষয়ক অংশের সঙ্গে আমি একমত পোষণ করতে পারছি না।”
আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে মন্ত্রী কামরুল ও মোজাম্মেলকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দেয় আদালত। ওই অর্থ সাত দিনের মধ্যে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশে দিতে বলা হয়। পরে তারা সেই অর্থ পরিশোধও করেন।