মাহমুদুর রহমান তারেক ::
তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর, লাকমা ছড়া, যাদুকাটা নদী, ট্যাকেরঘাটে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। শুক্রবার ছুটির দিনে প্রায় চার শতাধিক পর্যটক এসব এলাকায় ঘুরতে এসেছেন। ঈদের আগে ও পরে পর্যটকদের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বেসরকারি চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনে কাজ করেন নাবিল। শুক্রবার ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ এসেছেন ৮ বন্ধুকে নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর ও আশেপাশের এলাকায় ঘুরতে। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরেই ইচ্ছা ছিল টাঙ্গুয়ার হাওর দেখার। বন্ধুদের নিয়ে আসছি ঘুরতে, রাত্রি যাপন করে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করবো।
ব্যাংক কর্মকর্তা এহসানুল হক বলেন, কয়েক বছর আগে যাদুকাটা, বারেকের টিলায় এসেছিলাম। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক খারাপ ছিল। আজ পরিবারসহ ট্যাকেরঘাট, লাকমাছড়া ভ্রমণ করতে এসেছি। ফোনেই রাত্রিযাপন, নৌকা ব্যবস্থা করে ফেলেছি।
ড্যাফডিল ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইফতেখার মবিন জানান, শুধু তাহিরপুর নয় দেশের পর্যটন সম্ভাবনাময় অন্যান্য এলাকাগুলোর যাতায়াত ব্যবস্থাও খারাপ। এদিকটায় সরকারের নজর দিতে হবে। সরকারের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন, হোটেল-মোটেল, রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা, হাওরে উন্নত নৌযান নামানোর জন্য বেসরকারি পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।
গণমাধ্যম কর্মী গোলাম সারোয়ার লিটন বলেন, সুরমা নদীর উপর আব্দুর জহুর সেতু নির্মাণ হওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে কয়েকটি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় পর প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর তাহিরপুরের পর্যটন সম্ভাবনার দুয়ার খোলে গেছে। প্রতিদিনই টাঙ্গুয়ার হাওর, লাকমা ছড়া, যাদুকাটা নদী, বারকের টিলা, ট্যাকেরঘাটে শত শত পর্যটক আসছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। পর্যটকদের জন্য ইতিমধ্যে অনেকে গেস্ট হাউজ নির্মাণের চিন্তা ভাবনা করছেন। এক্ষেত্রে সরকারের দ্রুত এগিয়ে আসা উচিত।
পর্যটন নিয়ে কাজ করেন বাবরুল ইসলাম বাবলু। তিনি বলেন, আগামীদিন গুলোতে বিপুল সংখ্যক বিদেশ পর্যটক আসার সম্ভাবনা আছে তাহিরপুরে। এক্ষেত্রে নৌ-পুলিশের ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনের।
তাহিরপুরের গোলাবাড়ি ক্যাম্প এলাকায় নির্মাণ করা হাওর বিলাস রেস্ট হাউজের সত্ত্বাধিকারি বলেন, দেশ-বিদেশের পর্যটকরা এখানে ঘুরতে আসার আগেই ফোনে রেস্ট হাউজের রুম বুকিং দেন। এখানে পর্যটকদের চাহিদামত থাকা-খাওয়া, ঘোরাঘুরি জন্য নৌকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এবছর পর্যটকের সংখ্যা অন্যবারের তুলনায় বেশি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে আসেন। পর্যটন অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে তারা টাঙ্গুয়ার পুরো সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন না। তাদের থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা নেই। আমরা টাঙ্গুয়ার হাওরে আগামী ১৬-১৭ সেপ্টেম্বর নৌ-যাত্রার আয়োজন করেছি। এই নাওযাত্রার মাধ্যমে একদিকে টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটন সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে চাই, অন্যদিকে পর্যটন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাব।