সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সবাইকে বলব, বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীটা যেন একবার পড়ে, উপলব্ধির চেষ্টা করে। শিগগিরই বঙ্গবন্ধুর লেখা ডায়েরি থেকে বই প্রকাশের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ছাত্রলীগের এ আলোচনা সভার মধ্য দিয়েই ১৫ আগস্ট উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কর্মসূচি শেষ হলো।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্ররা লেখাপড়া শিখবে, উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে। ছাত্রদের হাতে কাগজ-কলম তুলে দিয়েছিলাম। আর পঁচাত্তরের পর জিয়া আমাদের ছাত্রদের হাতে অবৈধ অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়েছিল। তাদের বিকৃতির পথে নিয়ে যাচ্ছিল। ছাত্রসমাজের চরিত্র হনন করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।’
১৫ আগস্টের স্বঘোষিত খুনিদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিবিসিতে ইন্টারভিউ দিয়ে তারা বলেছিল, কে আমাদের বিচার করবে? তারা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে বিদেশে ছিলাম। যখন দেশ ছাড়ি, সবাই ছিল। আমার মা, ভাই-ভাইয়ের বউ সবাই আমাদের এয়ারপোর্টে দিয়ে আসে। প্রবাসে থাকতেই আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। যখন আমি ফিরে আসি- আমার চেনা মুখ, আপনজন কেউ নেই! কিন্তু আমি পেয়েছিলাম বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষকে। তাদের ভালোবাসা, ¯েœহ পেয়েছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘যে দর্পভরে, গর্ব করে তারা এ কথা বলেছিল…বিচার করেছি। আমরা করেছি। যখন দেশে ফিরে এসেছিলাম, তখন তাদের বিচার করব – এ প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছিলাম। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ফিরিয়ে আনব। মুক্তিযুদ্ধের বিকৃতি রোধ করব এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ফিরিয়ে আনব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সহায়তায় একে একে সব অন্যায়ের বিচার করতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করেছি। রায় কার্যকর করতে পেরেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যেটা তিনি (বঙ্গবন্ধু) শুরু করেছিলেন, আবার সেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি এবং বিচারের রায় কার্যকর করে যাচ্ছি। এটা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যাঁরা স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে বেঁচে আছেন, তাঁদের কষ্ট আর কেউ না বুঝুক, আমি বুঝি। তাঁদের ব্যথা-বেদনা আমি মর্মে মর্মে বুঝি। তাই যেমন আমার পিতা-মাতা, ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার করেছি, ঠিক তেমনিই যারা আপনজন হারিয়েছে, নিশ্চয় তাদের বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। সেই বিচারও আমি করে যাচ্ছি এবং করে যাব। এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।’ তিনি বলেন, যত বাধাবিপত্তি আসুক, যদি সংকল্প দৃঢ় থাকে, যেকোনো অর্জন সম্ভব। এ দেশের জন্য, এ দেশের মানুষের জন্য যেকোনো ত্যাগ করতে প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান। সভা পরিচালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক এস এম জাকির হোসাইন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি-সাধারণ স¤পাদকসহ বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।