সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সিলেটের তারাপুর চা বাগানের দেবোত্তর স¤পত্তিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৭১৫টি স্থাপনা হিন্দু ট্রাস্টের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। উচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. মাহবুবুর রহমান স্থাপনাগুলো বুঝিয়ে দেন।
জালিয়াতির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে এসব স্থাপনা দখলে রেখেছিলেন দৈনিক সিলেটের ডাক’র স¤পাদকমন্ডলীর সভাপতি ‘কথিত দানবীর’ শিল্পপতি রাগীব আলী। একই সঙ্গে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাস দ্রুত খালি করে দেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
দখল বুঝিয়ে দেয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. মাহবুবুর রহমান জানান, তারাপুর চা বাগানের অবৈধ স্থাপনাগুলোর মধ্যে কিছু স্থাপনা আজ আমরা সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে অফিশিয়ালি বুঝিয়ে দিয়েছি।
ইতোপূর্বে অবৈধ স্থাপনার গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের জন্য প্রশাসনের দেয়া নোটিশ প্রসঙ্গে তিনি জানান, উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলমান। তাদের ইতোপূর্বে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে বলা হয়েছে। উচ্ছেদে যাওয়ার পর সেটা করা হবে।
এ বিষয়ে তারাপুর হিন্দু ট্রাস্টের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত জানান, ৭১৫ জনের দখলে থাকা অবৈধ স্থাপনাগুলো প্রশাসন বুধবার বুঝিয়ে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত রাগিব আলী আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের কোনো টাকা দেয়নি। রাগিব আলী পালিয়ে গেছে, আশা করি আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করা হবে।
প্রসঙ্গত, ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জায়গায় গড়ে ওঠা তারাপুর চা-বাগান পুরোটাই দেবোত্তর স¤পত্তি। ১৯৯০ সালে ভুয়া সেবায়েত সাজিয়ে বাগানটির দখল নেন শিল্পপতি রাগীব আলী। নিজের নামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ৩৩৭টি প্লট তৈরি করে বিক্রি করেন তিনি। এসব প্লটে গড়ে উঠেছে বহুতল আবাসন ও বিপণি-বিতান।
গত ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ তারাপুর চা-বাগান দখল করে গড়ে ওঠা সব স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। রায় বাস্তবায়ন করতে সিলেটের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৫ মে চা-বাগানের বিভিন্ন স্থাপনা ছাড়া ৩২৩ একর ভূমি সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।
তারাপুর চা-বাগানের দেবোত্তর স¤পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার ভূমি আত্মসাতের আলোচিত দুটি মামলায় গত ১০ আগস্ট রাগীব আলী, তার ছেলে-মেয়ে এবং জামাইসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর রাগীব আলী সপরিবারে ভারতে পালিয়ে যান।