বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্ট) থেকে পুরাতন বাসস্টেশন একটি ব্যস্ত এলাকা। এই এলাকায় রয়েছে ব্যাংক-বীমাসহ নানা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। কিছুদিন ধরে ব্যস্ত এই সড়কটিতে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই এলাকায় দীর্ঘ যানজট লক্ষ্য করা গেছে। এতে অফিসগামী কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ যাত্রীরাও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ভুক্তভোগী ও ক্ষুব্ধ যাত্রীরা রাস্তায় পার্কিয়ে থাকা যানবাহনের দৌরাত্ম্য বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
সরেজমিন ওই সড়কে দেখা গেছে প্রতিদিনই যত্রতত্র পার্কিংয়ের দৃশ্য। কালিবাড়ি মোড়ে অটো গাড়ি ও অটোরিকশা মূল সড়কে পার্কিং করা থাকে। এতে সড়ক সংকুচিত হওয়ায় দুই দিক থেকেই জটের সৃষ্টি হয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। কামারখাল থেকে হোটেল নূরানী পর্যন্ত সকাল সন্ধ্যা প্রাইভেট কার ও লাইটেসের বহর দেখা যায়। তাদের নির্ধারিত কোন পার্কিং বা স্টেশন না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় গাড়ি পার্কিং করে রাখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিকেলের পরে এই এলাকা চলে যায় পুরোপুরি ঢাকাগামী বাসের নিয়ন্ত্রণে। বিরাট এই গাড়িগুলো পার্কিং করে রাখায় মূল সড়ক সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে বিকেল থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত এই এলাকায় ঘনঘন যানজটের সৃষ্টি হয়।
পুরাতন বাসস্টেশন এলাকায় অটোটেম্পু নির্ধারিত স্থানে পার্কিংয়ের কথা থাকলেও অনেক সময় চালকরা মূল সড়কে লেগুনা গাড়ি পার্কিং করে রাখতে দেখা যায়। মূল সড়কের দুইদিকে লেগুনা গাড়ি পার্কিং করে রাখায় এই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে।
সুনামগঞ্জ আরটিসি (আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি) সূত্রে যায়, শহরের এই যানবাহন ও পার্কিং নিয়ে প্রতিটি মিটিংয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা উপস্থিত না থাকায় সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে যানজট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এক কর্মচারী বলেন, আমাদের অফিস চলাকালীন সময়েও এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজট দেখা যায়। অবশ্য এই সময় প্রশাসনের নজরে পড়ার জন্য ট্রাফিকদের তৎপরতা দেখা যায়। তিনি বলেন, সারাদিন এই এলোমেলো পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিলে অবৈধ যানবাহনগুলোর অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা সম্ভব।
মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, পুরাতন বাসস্টেশনে যত্রতত্র লেগুনা-কার পার্কিং করে রাখায় দীর্ঘ যানজট লাগে। আলফাত স্কয়ার এর প্রভাব পড়ে। তীব্র রোদে আমার মতো শত শত মানুষ এই কারণে ভোগান্তি পোহান। এই দৃশ্য প্রতিদিনের। যত্রতত্র পার্কিং এর বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সুনামগঞ্জ বিআরটিএ-র মোটরযান পরিদর্শক জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য না আসায় সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না। তবে আগামী সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, ব্যস্ত সড়কে যত্রতত্র যানবাহন পার্কিং করার কারো অধিকার নেই। যারা এটা করে রাস্তা সংকুচিত করে যানজটের সৃষ্টি করছে তারা অবশ্যই এর জন্য দায়ী। আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।