বহুল আলোচিত ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ১২ বছর পূর্ণ হল গতকাল। এতদিনে এ ঘৃণ্য ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনার নি®পত্তি হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। দুর্ভাগ্যজনক, তা হয়নি।
আমরা দেখেছি, বিগত জোট সরকারের শাসনামলে এ সংক্রান্ত মামলা ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা হয়েছে নানাভাবে। ধামাচাপা দেয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে অনেক তথ্য। পরবর্তীকালে নতুন করে তদন্ত হলেও বিচার প্রক্রিয়া চলছে ধীরগতিতে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চালানো ওই হামলায় অল্পের জন্য রক্ষা পান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহত হন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভি রহমানসহ দলের ২৪ জন নেতাকর্মী। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কলঙ্কজনক ঘটনার নজির কমই আছে। যে বা যারাই এ ঘটনার জন্য দায়ী হোক, তাদের পরিচয় যা-ই হোক- যথাযথ বিচারের মাধ্যমে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
২১ আগস্টের ঘটনার পর জজ মিয়া নামে এক নিরীহ ব্যক্তিকে আটক করে তার কাছ থেকে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করে ঘটনার প্রকৃত কুশীলবদের আড়াল করার চেষ্টা করেছিল স্বয়ং পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এজন্য সিআইডি’র সাবেক চার তদন্ত কর্মকর্তার দিকে অভিযোগের আঙুল উঠলেও তখনকার অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তিও এর দায় এড়াতে পারেন না। সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসবে কারা ছিল ওই ঘটনার পরিকল্পনাকারী, কারা ঘটিয়েছে গ্রেনেড হামলা। অবশ্য দেখতে হবে কেউ যেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার না হয়। তবে ২১ আগস্ট ঘটনার জন্য যারা প্রকৃত দায়ী, তারা যে-ই হোক এবং যেখানেই থাকুক, তাদের দাঁড় করাতে হবে বিচারের কাঠগড়ায়। দেশবাসীর কাছে এ সত্য উদঘাটিত হওয়া জরুরি এবং তা প্রতিষ্ঠিত হতে হবে স্বচ্ছতার সঙ্গে।
আমরা মনে করি, গ্রেনেড হামলা মামলার সুষ্ঠু নি®পত্তি হওয়া দরকার শুধু অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য নয়, রাজনৈতিক অপশক্তিকে চিহ্নিত করার প্রয়োজনেও এবং তা গণতন্ত্রেরই স্বার্থে। তাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার ত্বরান্বিত করা সময়ের দাবি।