সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সারাদেশে বিএনপি’র জেলা কমিটি গঠন করার জন্য চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান উদ্যোগ নিয়েছেন। এই জন্য তারা ইতোমধ্যে জেলার নেতাদের মধ্যে কারা কারা দায়িত্ব পেতে পারেন তাও খতিয়ে দেখছেন। তাদের মূল্যায়নে এগিয়ে রয়েছেন ওই সব জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতারা যারা ২০১৩ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে তাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। বিভিন্নভাবে দলের কর্মসূচি পালন করেছেন। সকল বাধা উপক্ষো করেও সক্রিয় ছিলেন ও আছেন। ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাসের আন্দোলনে সাফল্য এনেছেন ওই সব নেতাদের দায়িত্ব দিতে চাইছেন। সেই হিসাবে সম্ভাব্য নেতাদের নামও রয়েছে তাদের কাছে। সেই সঙ্গে যেসব নেতারা সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলেন না, মামলার অজুহাত দেখিয়ে মাঠের বাইরে ছিলেন ওই সব নেতারা তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত রয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র একজন নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির মত জেলা কমিটিতেও চমক থাকবে বলে মনে করছেন দলের চেয়ারপারসন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, মাঠের যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের সুযোগ দিতে হবে। তাদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে। তারা যেভাবে কাজ করেছেন, পুলিশের ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যত নির্যাতন সহ্য করেছেন তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। কারণ তারা মাঠে আন্দোলন না করলে বিএনপি’র ঢাকায় যেভাবে আন্দোলনে সাফল্য ব্যর্থতার মুখ দেখেছে, জেলা পর্যায়েও তেমন হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু নেতারা মাঝে মাঝে কেন্দ্রীয় ও ঢাকার নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তারা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় মাঠে থেকেছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামও এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পালন করেছেন। ওই সব নেতাদের নামে সরকার রাজনৈতিক মামলা দিয়েছে। তাদেরকে হয়রানি করেছে। গ্রেফতারের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে ছিলেন। তাদেরকে না পেয়ে ওই সব নেতার পরিবারের সদস্যদের উপরও নির্যাতন করা হয়েছে। ওই সব নেতাদের মাঠে থাকার জন্য তাদেরকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য তারেক রহমান লন্ডন থেকে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতা বলেন, বিএনপির এখন দলকে সুসংগঠিত করা একটি বড় কাজ। এই কাজ করার জন্য অবশ্যই আগে জেলা কমিটিগুলো গঠন করতে হবে। অনেক জেলায় বিএনপির সভাপতির পদ থেকে কমিটিতে যেসব নেতা রয়েছেন তাদের বেশিরভাগই গ্রেফতার হবেন এমন আতঙ্কে রয়েছেন। অনেক নেতাই আন্দোলনের সময়ে গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের কারো কারো জামিন হয়েছে। তবে বেশিরভাগ নেতাই জামিন পাননি। এই কারণে তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপিকে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। এই সব দিকগুলো বিবেচনা করেই নতুন করে জেলা কমিটি করা হবে।
যেসব নেতা আন্দোলন করে ২/৩ বছর ধরে কারাগারে আছেন এমন নেতাদের পদে রাখা হবে নাকি কারাগারে থাকার কারণে বাদ পড়তে পারেন জানতে চাইলে বিএনপি’র নীতি নির্ধারণী একটি সূত্র জানায়, তারাতো দলের জন্য কাজ করেই কারাগারে গেছেন। তাদের জামিনে মুক্ত করার জন্য চেষ্টা চলছে। কিন্তু সরকার তৃণমূল ও জেলার নেতাদের এমনভাবে হয়রানি করেছে যে আমরা নেতাদের নিরাপদ স্থানেই থেকে কাজ করার জন্য বলেছি। ওই সব নেতাদের মধ্যে যারা মাঠে না থাকলেও আত্মগোপনে থেকে কাজ করেছেন তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা জেলা কমিটি গঠন করার জন্য সব ধরনের কাজ শুরু করবো। জেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যোগ্য, সাহসী ও ত্যাগী এবং আগামী দিনে বিএনপি’র জন্য আরো বেশি করে কাজ করতে পারবেন, দলের লক্ষ্য পূরণ করার জন্য কাজ করতে পারবেন সেই বিষয়টিও প্রাধান্য দেয়া হবে। জেলা কমিটি গঠন কবে নাগাদ গঠন করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা দ্রুতই কাজ করতে চাইছি। দলকে সাংগঠনিকভাবে আরো সুদৃঢ় করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।