1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ০৭:৫১ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওরাঞ্চলের কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে

  • আপডেট সময় শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৬

বিশেষ প্রতিনিধি ::
হাওর-ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জের কৃষক প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন। এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে সংগ্রাম করছেন তাঁরা। কিন্তু রুদ্রপ্রকৃতি প্রতি বছরই তাদের স্বপ্ন ভেঙে দিচ্ছে। চাষবাস করতে গিয়ে কৃষক দিনদিন ফতুর হয়ে যাচ্ছেন। কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি বাড়লেও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না তাঁরা।
কৃষক ও কৃষক আন্দোলনের নেতারা জানান, যুগ যুগ ধরে নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক। এখন বঞ্চনার সঙ্গে যোগ হয়েছে ফসলহারানো। প্রতি বছরই পাহাড়ি ঢল, অতিবর্ষণ, অনাবৃষ্টি এবং শিলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে চললেও তারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেই না। প্রকৃত কৃষকের কাছে পৌঁছেনা সরকারের নেওয়া নানা উপকরণ ও সহায়তা। বরং মধ্যস্বত্তভোগীরা ভোগ করছে কৃষকের সুবিধা।
জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসে জামালগঞ্জ উপজেলা ছাড়া অন্য দশ উপজেলার প্রায় প্রায় তিন ভাগের দুইভাগ ফসল নষ্ট হয়েছে শিলাবৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে। কিন্তু ক্ষয়-ক্ষতির প্রকৃত চিত্র কৃষি অধিদপ্তর সরকারের কাছে না পাঠিয়ে ২০-২৫ ভাগ ক্ষতির রিপোর্ট পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও কৃষকরা জানান, চলতি বোরো মওসুমে সুনামগঞ্জে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে কৃষকের। কিন্তু সেই চিত্র না পাঠানোয় সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এই জেলার ফসলহারা কৃষক। ফসলহারা কৃষকের পক্ষে ফসলহানির কারণ নির্ণয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনিয়মের বিরুদ্ধে কমিটি গঠিত হলেও সেই রিপোর্ট আজও প্রকাশিত হয়নি। যার ফলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
সম্প্রতি পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে জেলার আমন ও বীজতলাসহ সবজির প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। টাকার অংকে যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। তাছাড়া মৎস্যচাষীদেরও প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এভাবে প্রতিনিয়তই কৃষিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই জেলার কৃষক। ক্ষয়-ক্ষতি বাড়লেও ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় কৃষকদের অর্থনীতির অবস্থা ক্রমশ নি¤œমুখি হচ্ছে। তাছাড়া কৃষকের পক্ষে স্থানীয় কৃষি সংগঠনগুলো সহযোগিতা ও দাবি আদায়ে সোচ্চার না হওয়ায় ক্ষতিপূরণের দাবি জোরালো হচ্ছেনা। ফলে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক।
সদর উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক সুন্দর আলী বলেন, ঋণের জালে বন্দি হয়ে পড়ছে কৃষক। প্রতি বছর ঋণ নিয়ে জেলার অনেক কৃষক চাষ করেন। বন্যায় ফসল নিয়ে যাওয়ায় তারা সেই ঋণ পরিশোধ করতে পারেন না। ফলে আবারও ঋণ নিয়ে তাদেরকে চাষ করতে হচ্ছে। এ কারণে তারা ঋণের জালে বন্দি হয়ে পড়ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ফসল হারিয়েও ক্ষতিপূরণ পায়না বলে তিনি জানান।
হাউসের নির্বাহী পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ বলেন, হাওরাঞ্চলের কৃষক প্রতিনিয়ত ফসল হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সেই তুলনায় সামান্য ক্ষতিপূরণও পাচ্ছেনা। আমরা স্থানীয়ভাবে সামাজিকভাবে বিভিন্ন পেশাজীবীদের নিয়ে এ বছর প্রায় ৫টি সভা করে কৃষকদের পক্ষে কথা বলেছি। তাদের ক্ষতিপূরণের জন্য দাবি জানিয়েছি। সরকারিভাবে ক্ষয়-ক্ষতির তথ্য গোপন করায় আমাদের কৃষকরা সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, হাওরাঞ্চলের কৃষক প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এবছর তাদের দুই তৃতীয়াংশ ফসল নষ্ট হয়েছে। প্রতি বছর ফসল হারিয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেনা। এতে অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছে হাওরের কৃষি অর্থনীতি। হাওরাঞ্চলের কৃষকের কথা বিশেষভাবে বিবেচনা করে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান এই জনপ্রতিনিধি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com