মাহমুদুর রহমান তারেক ::
সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি, খাদ্য, পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। প্রশাসন থেকে যে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন বন্যাদুর্গতরা।
সুনামগঞ্জ শহরের বড়পাড়া এলাকার মারজানা আক্তার বলেন, ঘরের ভেতরে তিন দিন পানি ছিল, আসবাবপত্রসহ অনেক কিছুই নষ্ট হয়েছে। সাহায্য-সহযোগিতা কেউ করেনি।
শহরের নীবনগর এলাকারও প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার একই ভোগান্তিতে আছেন। সেখানে পর্যাপ্ত সাহায্য দেয়নি কেউ। রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। পানি নেমে গেলেও অনেকের বসতঘর এখনো স্যাঁতস্যাঁতে।
ওই এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম মুবিন বলেন, বন্যায় এলাকার সড়ক, প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকের ঘরেই খাবারের সংকট আছে। যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের বিধু রায় বলেন, বন্যায় ঘরে পানি উঠে যায়। পানি কমার পর ঘর ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। জরুরিভাবে সরকার থেকে আমাদের আর্থিক সাহায্য দরকার।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ঘাট এলাকার শাহিন আলম বলেন, মাস কয়েক আগে হাওরের বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন আবার বন্যার পানিতে ভিটে ভেঙে গেছে। এখন আমরা বাঁচবো কেমনে বুঝতেছি না।
শুধু শাহিন আলম না বড়ঘাট এলাকার অনেক বাসিন্দারই অবস্থা একই। বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
তাহিরপুর উপজেলার রাজন চন্দ বলেন, বন্যার পানি সড়কে উঠে যাওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগযোগ প্রায় ১৫দিন বন্ধ ছিল। আমাদের নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। পানি কমায় পর দেখছি সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে গেছে।
এদিকে পানির কমার পর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পানিবাহিত রোগও দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে মানুষজনের মধ্যে।
ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন বলেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। পাশাপাশি আমরাও ত্রাণ দিয়ে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য ১ লাখ ৫৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ সাড়ে ৪লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।