1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ১১:১৮ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

কেমন হবে জেলা পরিষদ নির্বাচনের পদ্ধতি?

  • আপডেট সময় রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। জানা গেছে, চলতি বছরের মধ্যেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠান চায় ক্ষমতাসীন দলটি। তবে, এ নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে-এ নিয়ে সরকারি দলের নেতা ও এমপিদের মধ্যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যমান আইনের আলোকে নির্বাচনটি নির্বাচকমন্ডলীর (ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে) মাধ্যমে অনুষ্ঠানের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলেও সদ্য প্রবর্তিত স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো আইন সংশোধন করে দলীয় ভিত্তিতে হবে নাকি বিদ্যমান জেলা পরিষদের বিদ্যমান আইনের নির্দলীয়ভাবে হবে, সে বিষয়ে দলের মধ্যে অ¯পষ্টতা রয়েই গেছে।
জানা গেছে, গত শনিবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানান। ওই সময়ে জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে জেলা পরিষদ নির্বাচন হবে বলে জানান। পরে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকেও জেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠলে প্রধানমন্ত্রী একই ধরনের মন্তব্য করেন।
জানা গেছে, কার্যনির্বাহী সংসদ ও সংসদীয় দলের বৈঠকে বিদ্যমান জেলা পরিষদ আইন ২০০০-এর বিধান অনুসারে নির্বাচকমন্ডলীর (ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে) মাধ্যমে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতা ও এমপিদের নিশ্চিত করেন। তবে নির্বাচনটি দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে হবে নাকি নির্দলীয়ভাবে হবে, এ নিয়ে সভাপতি ¯পষ্ট করে কিছু বলেননি।
শনিবার সংসদীয় দলের বৈঠকে তিনি বলেন, আপনারা তো সংসদে আইন পাস করেছেন। কাজেই আইনে কী আছে, সেটা আপনাদের জানার কথা। আইনে যেটা রয়েছে, সেই অনুযায়ী এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দলীয় সভাপতির এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ও এমপি গণমাধ্যমকে জানান, নির্বাচন ইলেক্ট্রোরাল কলেজ পদ্ধতিতে পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে হবে, নেত্রীর কথায় এটা তাদের কাছে ¯পষ্ট হয়েছে। কিন্তু প্রার্থীদের দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া বা দলীয় প্রতীক থাকবে কিনা-সেটা তারা ¯পষ্ট হতে পারেননি। কারণ, নেত্রী এ বিষয়ে কোনও কথা বলেননি।
ক্ষমতাসীন দলের একজন মধ্যম সারির নেতা ও সংসদ সদস্য একই কথা জানান।
বিদ্যমান আইনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি জানান, দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে জেলা পরিষদ নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি বিল গত বছর সংসদে পেশ হলেও পরে সেটা পাস না করে প্রত্যাহার করা হয়। কাজেই বিদ্যমান আইন বলতে সেই ২০০০ সালের আইনকেই বোঝাবে। কারণ ওই আইনটি এখনও বহাল রয়েছে। আর ওই আইনে দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচনের কথা নেই।
দলের অবস্থান তুলে ধরে এই নেতা বলেন, স্থানীয় সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান হচ্ছে। সে হিসেবে জেলা পরিষদও সেভাবে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই আইনটি সংশোধন করে নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হুইপ আতিউর রহমান আতিক জানান, সংসদীয় দলের বৈঠকে তিনিই জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছিলেন। পরে সভাপতি জানিয়েছেন সংসদে আমরা যে আইন পাস করেছি, তার আলোকে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন।
দলের সাংগঠনিক স¤পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচন হবে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সভানেত্রী তাদের জানিয়েছেন। তবে দলীয় ভিত্তিতে হবে নাকি নির্দলীয়ভাবে হবে-তা তিনি এখনও জানাননি।
আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সভাপতি বলেছেন বিদ্যমান আইনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংসদে গত বছর যে আইনটি পেশ করা হয়েছিল, সেটা পরবর্তী সময়ে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কাজেই বিদ্যমান আইন বলতে আমরা ২০০০ সালের আইনকেই মনে করছি।
এই নির্বাচনটি দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠান করতে হলে বিদ্যমান আইনটি সংশোধন করে দলীয় মনোনয়নের বিধানটি যুক্ত করতে হবে বলে জানান এই সিনিয়র সংসদ সদস্য।
এর আগে স্থানীয় সরকারের অন্য ৪টি প্রতিষ্ঠানের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনটিও দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠানের জন্য গত বছরের ১১ নভেম্বর সংসদে পৃথক জেলা পরিষদসহ আরও ৪টি আইন সংসদে ওঠে। দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকের বিধান যুক্ত করে প্রস্তাবিত অন্য আইনগুলো গত ১৬ নভেম্বর পাস হলেও একই দিনে জেলা পরিষদ আইনটি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রত্যাহার করে নেন। কেন বিলটি প্রত্যাহার হয়, সে বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা ওই সময় না দেওয়া হলেও জানা যায়, সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ার আশঙ্কায় সংসদীয় কমিটির সুপারিশের আলোকে বিলটি প্রত্যাহার করা হয়।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে, এটা সরকার জানে। সরকার আইনের মাধ্যমে এটা ঠিক করবে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। যখন সরকার চাইবে আমরা নির্বাচন আয়োজন করতে পারব। সরকার চাইলে বিদ্যমান আইনে করতে পারে। আবার আইন সংশোধন করে দলীয় ভিত্তিতেও করতে পারে। এটা স¤পূর্ণ সরকারের এখতিয়ার।
এদিকে বিদ্যমান আইনে জেলা পরিষদ নির্বাচকমন্ডলীর ভোটে নির্বাচনের কথা রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় সরকারের অন্য সব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধি ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদ আইন-২০০০-এর ১৭(১) ধারায় বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলার অন্তর্ভুক্ত সিটি করপোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র, কমিশনার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, কমিশনার এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়ে নির্বাচকমন্ডলী গঠিত হবে।
১৭(৩) ধারায় বলা হয়েছে, ‘নির্বাচকমন্ডলীর সদস্য নন এমন কোনও ব্যক্তি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না। আইনের এ ধারা অনুযায়ী ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের ভোটদানের মাধ্যমে জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পরিষদ নির্বাচনের পর একটি পূর্ণাঙ্গ পরিষদ গঠন করা হবে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ১৫ জন সদস্য এবং সংরক্ষিত পাঁচজন নারী সদস্য নির্বাচন করা হবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ছাড়া বাকি ৬১টি জেলা পরিষদে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ করে সরকার। তখন স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলেছিলেন, ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে জেলা পরিষদ গঠন করা হবে। তবে তখন এ নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আগামী নভেম্বরে জেলা পরিষদের প্রশাসকদের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com