বিশেষ প্রতিনিধি ::
মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের তোপের মুখে পড়েন এনজিও প্রতিনিধিরা। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে জেলার পানিবন্দি লাখো মানুষের পাশে সহায়তার হাত না বাড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা। তারা মানবিক ও ত্রাণ সহায়তার জন্য এনজিও প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সভার সভাপতি মো. লুৎফুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সভায় এনজিও প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান তারা বন্যাকবলিত মানুষকে এখন পর্যন্ত কোন সহায়তা দিয়েছে কি-না। এনজিওরা এই দুর্যোগের সময় কি করছে তাও জানতে চান তিনি।
এসময় সিএনআরএসের জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, তারা জেলার বন্যাকবলিত মানুষের তথ্য প্রধান কার্যালয়কে জানিয়েছেন। কার্যালয় সিদ্ধান্ত নিলে তারা সহায়তা দিতে পারবেন। তা না হলে তাদের কোন সহায়তা দেওয়ার ক্ষমতা নেই।
সভার সভাপতি পরে কেয়ার বাংলাদেশ সুনামগঞ্জ অফিসের প্রধান জোবেদা খাতুনের কাছে জানতে চান বর্তমান দুর্যোগকালে কেয়ার দুর্যোগ কবলিত মানুষের জন্য কি সাহায্য করছে। এর জবাবে কেয়ারের এই প্রতিনিধি জানান, তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন শাখা থেকে জেলার বন্যার্ত মানুষের তথ্য সংগ্রহ করে হেড অফিসে পাঠিয়েছেন। হেড অফিসের অনুমোদন ছাড়া তারা কোন সহায়তা দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না বলে তিনি জানান।
এরপরে ভার্ডের প্রতিনিধি জানান, তাদের দুর্যোগ প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন আর কোন সহায়তা দিতে পারবেন না। এভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সকল এনজিও প্রতিনিধি তাদের প্রধান কার্যালয় ও আলাদা প্রকল্প ছাড়া সুনামগঞ্জ জেলার বন্যাপীড়িত মানুষকে কোন সহায়তা দিতে পারবেন না বলে জানান। তাদের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন অনেকেই।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সময় টিভির সাংবাদিক হিমাদ্রী শেখর ভদ্র মিঠু বলেন, ‘এনজিওদের কাজ-কারবার সেই লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের মতো। দুর্যোগ কবলিত মানুষের দুর্যোগের সময় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে দিতেই দুর্যোগ পীড়িত মানুষের দুর্ভোগ চলে যায়। তারা যখন সহায়তার হাত বাড়ান তখন আর সহায়তার প্রয়োজন হয় না। তখন সেই সহায়তাই তারা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন।
সভায় উপস্থিত সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাইজার মো. ফারাবি বলেন, আজ আমি এনজিওদের নিয়ে বসেছিলাম। তাদের প্রতিনিধিরা আমাকে জানিয়েছেন এই মুহূর্তে তাদের সহায়তা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া দুর্যোগ মুহূর্তে এখন পর্যন্ত তিনি রেডক্রিসেন্টের কাউকে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে পাননি বলেও জানান।
এভাবেই সভায় পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা এনজিও’র উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এই জেলায় কাজ করতে হলে জেলার মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত বা আপদকালীন সমস্যায় পড়লে তাদেরকে মানবিক ও ত্রাণ সহায়তা দিয়ে কাজ করতে হবে।