সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সারাদেশের মাদকের ¯পটের নাম জানতে চেয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাদক ¯পটের নামসহ কোন ¯পটে কী ধরনের মাদক বিক্রি হয়, তার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ৬৪ জেলায় আড়াই শতাধিক মাদক ¯পট রয়েছে। বর্তমানে আরও একটি প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছে অধিদফতর।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক নিয়ন্ত্রণে গঠিত টাস্কফোর্স গত জুনে একটি সভা করে। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, মাদক প্রতিরোধে সারাদেশের মাদকের ¯পট ও ব্যবসায়ীদের তালিকা জানা প্রয়োজন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে চিঠি দিয়ে ¯পট ও ব্যবসায়ীদের নাম জানতে চায়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বর্তমানে ¯পট ও ব্যবসায়ীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করছে। ¯পটগুলোতে কী কী মাদক বিক্রি হয়, এর রুট কী, বাহক কারা – এসব তথ্য সংগ্রহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, তারা একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। যেখানে আড়াইশ মাদক ¯পটের তথ্য রয়েছে। তবে এই প্রতিবেদনের আরও কাজ চলছে। একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করে শিগগিরই জমা দিবে তারা।
এ বিষয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা শাখা) নজরুল ইসলাম শিকদার বলেন, আমরা ৬৪ জেলা নিয়ে কাজ করছি। প্রতিটি জেলায় ন্যূনতম চার থেকে পাঁচটি ¯পট রয়েছে। তাদের রুটসহ ব্যবসায়ীদের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে গঠিত টাস্কফোর্স এ বিষয়ে কাজ করছে। শিগগিরই এসব ¯পটে একযোগে অভিযান চালানো হবে।
এদিকে, মাদক মামলার সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। তবে মামলা নি®পত্তিতে বিভিন্ন জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন ঝুলে আছে এসব মামলা।
অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মাদকদ্রব্য আইনে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৬৪ হাজার ৮১৯টি। এর মধ্যে ২০১০ সালে ৮ হাজার ১৯টি, ২০১১ সালে ৮ হাজার ৭৪৯টি, ২০১২ সালে ১০ হাজার ১৪টি, ২০১৩ সালে ১০ হাজার ১১১টি, ২০১৪ সালে ১১ হাজার ৭২৩টি এবং ২০১৫ সালে মামলা হয়েছে ১২ হাজার ২৯৬টি। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত আরও সাড়ে ৩ হাজার মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
কোকেন, ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইন, চোলাই মদ, গাঁজা ও বিভিন্ন ধরনের ইনজেকশন উদ্ধারের ঘটনায় এসব মামলা হয়েছে। অস্ত্র মামলাও আছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের। একযুগ আগের মামলাও এই পরিসংখ্যানে আছে। অনেক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অবসরে গেছেন, তবু মামলা নি®পত্তি হয়নি। দেশের প্রতিটি অঞ্চলেই এমন মামলার চাপ রয়েছে। আঞ্চলিকভাবে অনেক বছরের পুরনো মামলা এখনও চলছে।
ডিএনসির উপ-পরিচালক (ডিডি) মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন, মাদক মামলা নি®পত্তিতে সবচেয়ে বড় বাধা সাক্ষী জটিলতা। মামলার সাক্ষী হাজির করতে বেগ পেতে হয়। সাক্ষীরা ঠিক সময় হাজির হয় না। তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তারপরও তাদের হাজির করা যায় না। তাছাড়া আমাদের যারা নিজস্ব সাক্ষী, তারাও অবসরে গেলে আর সাক্ষ্য দিতে চান না। এসব কারণে মামলা নি®পত্তিতে ঝামেলা হয়। তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব প্রসিকিউটরও কম। ঢাকায় ৭০ থেকে ৭৭টি আদালতে আমাদের নিজস্ব প্রসিকিউটর মাত্র চারজন। বর্তমানে দু’জন সহকারী কাজ করছেন।