সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে মাকু রবি দাস (৪৭) নামে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এক আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। মঙ্গলবার দিনগত রাতে ১২টা ১ মিনিটে ফাঁসি কার্যকর হয়। এসময় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের ও কারা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ফাঁসি কার্যকর হওয়া মাকু রবি দাসের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দারাগাঁওয়ে। তিনি সমাধনী রবি দাসের ছেলে।
প্রায় ১৬ বছর আগের এক হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন রবি দাস। ২০০১ সালে এক প্রতিবেশিকে কুপিয়ে হত্যা করেছিলেন তিনি।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুদ পারভেজ মঈন জানান, ২০০৩ সালের ০৯ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত নাইনকা রবি দাস হত্যা মামলায় (দায়রা ৫৭/২০০২) মাকু রবি দাসকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন। ২০০১ সালের ৩১ অক্টোবর রাতে প্রতিবেশি নাইনকা রবি দাসকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন মাকু রবি দাস। পরবর্তীতে মাকু রবি দাস জেল আপিল (জেল পিটিশন নং-০৩/২০০৭) করলেও তার মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানালে তাও নামঞ্জুর হয়।
গত ১২ মে কারা অধিদফতরের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফাঁসি কার্যকরের আদেশ দিলেও পবিত্র রমজান মাস থাকায় তা কার্যকর করা যায়নি। মাকুর মৃত্যুদন্ড কার্যকরের জন্য দিনেই কাশিমপুর কারাগার থেকে জল্লাদ রাজুকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। এরই মধ্যে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের সব প্রক্রিয়া স¤পন্ন হয়। রাত ৮টা থেকে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ফাঁসি কার্যকরের সময় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুদ পারভেজ মঈন জানান, সোমবার মাকু রবি দাসের স্বজনেরা তার সঙ্গে দেখা করে গেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আরও ৫ জন স্বজন শেষ দেখা করেন।
প্রসঙ্গত, এই ফাঁসির আগে ২০১১ সালের মার্চ মাসে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত রবি মুন্ডাকে ওরফে মো. বিল্লাল (৬০) ফাঁসি দেওয়া হয়েছিলো। মৃত্যুর তিনদিন পূর্বে ইসলাম ধর্মগ্রহণকারি রবি মুন্ডা ছিলেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার নালুয়া চা বাগানের ধর্মনাথ লাইনের মৃত অমর সিং মুন্ডার ছেলে।
২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে অসুস্থ স্ত্রী সারথি মুন্ডাকে চিকিৎসা করাতে নালুয়া চা বাগানের কবিরাজ নন্দলাল ঝরার কাছে নিয়ে যান রবি মুন্ডা। ঝাড়ফুঁকে কোনো উন্নতি না হওয়ায় বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে রবি মুন্ডা ও তার বাবা অমর সিং মুন্ডা কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে নন্দলাল ঝরাকে হত্যা করে। পাঁচ বছর আগে কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় দন্ডপ্রাপ্ত অমর সিং মুন্ডা বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান।