সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁয় হামলা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতার আহ্বান করছি।
এ ধরনের হামলা যেন দেশের চলমান অগ্রগতিতে যাতে বাধা সৃষ্টি না করতে পারে সে লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে একসঙ্গে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকাল ৫টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গুলশানের স্প্যানিশ রেস্তোরাঁয় হামলাকারীরা দেশীয় বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। সরকার এসব জঙ্গি দমনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিহত সন্ত্রাসীদের শনাক্তকৃত পরিচয় থেকে দেখা গেছে যে, তারা সবাই বাংলাদেশের বিভিন্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। দেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন সময় যে সকল জঙ্গি কর্মকাণ্ড ইতোপূর্বে সংঘটিত হয়েছে, এ ঘটনাও তারই অনুবৃত্তিক্রমে ঘটানো হয়েছে।
গুলশানে হামলার বর্ণনা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি করতে করতে গুলশান-২ নম্বর সেক্টরে হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রবেশ করে। প্রথমে টহল পুলিশ তাদের চ্যালেঞ্জ করে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী সেখানে হাজির হয়। সন্ত্রাসীরা তখন গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলি করে।
তিনি বলেন, পরে শনিবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে জিম্মি উদ্ধার অভিযান শুরু হয়ে ১৩ মিনেটের মধ্যে সন্ত্রাসীদের পরাভুত করা হয়। অভিযানে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে ৩টি একে-২২ মেশিনগান, ৫টি নাইন এমএম পিস্তল, ৯টি গ্রেনেড সেফটি পিন, ১২৭ রাউন্ড তাজাগুলিসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
স্বরাষ্টমন্ত্রী জানান, অভিযানের পরে হলি আর্টিজান থেকে মোট ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ১৭ জন বিদেশি ও তিনজন বাংলাদেশি। বিদেশিদের মধ্যে ৯ জন ইতালি, ৭ জন জাপানি ও একজন ভারতীয় নাগরিক।
তিনি জানান, অপর ছয়টি লাশ সন্ত্রাসীদের বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়। পরে এদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তাদের অভিভাবকগণ তাদের শনাক্ত করেছেন। তারা জঙ্গি বলেই তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গুলশানে হামলার ঘটনায় ৪ জুলাই ৫ সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করে গুলশান থানায় মামলা দায়ের হয়েছে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ মামলা তদন্তের জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা নিয়োজিত আছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রদের সহযোগিতার আহ্বান করছি। এ ধরনের হামলা যেন দেশের চলমান অগ্রগতিতে যাতে বাধা সৃষ্টি না করতে পারে সে লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে একসঙ্গে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, র্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।