স্টাফ রিপোর্টার ::
প্রকৃতির লীলাভূমি রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার হাওরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আইইউসিএন ও তার সহযোগী উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক হাওরটিতে জীববৈচিত্র সংরক্ষণের নামে ধ্বংস করার অভিযোগ এনে তাদের তুলোধুনো করেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। গতকাল বুধবার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন বিগত ১০ বছর ধরে হাওরের দেখভালের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা। সামাজিক তহবিল ব্যবস্থাপনা (এসসিএম) হস্তান্তর এবং সংগঠনের ভবিষ্যত ব্যবস্থাপনা নিয়ে এ মতবিনিময় সভা ডাকা হয়।
এতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবি’র কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী এবং হাওরপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।
দাতা সংস্থা এসডিসি হাওরের ব্যবস্থাপনায় অর্থ বরাদ্দে অপারগতা প্রকাশ করার পরিপ্রেক্ষিতে আইইউসিএনের তত্ত্বাবধানে হাওরের উপকারভোগীদের নিয়ে গঠিত সংগঠনের সদস্যদের সঞ্চয় ভাগবণ্টন কোন প্রক্রিয়ায় করা হবে- এ বিষয়ে মতামত জানতে এই সভার আয়োজন করা হলেও বিগত ১০ বছরে হাওরের উন্নয়ন নিয়ে সুনামগঞ্জের মানুষের মতামত কেন নেওয়া হলো না এমন প্রশ্নের মুখে পড়েন আয়োজকরা।
সভায় উপস্থিত নানা শ্রেণিপেশার মানুষের পক্ষ থেকে ক্ষোভের সঙ্গে জানানো হয়, বিগত ১০ বছরে টাঙ্গুয়ার হাওরে জীববৈচিত্র সংরক্ষণের নামে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ যেহেতু শেষ হয়েছে তাই দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোকে এ ব্যাপারে মানুষের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
তারা দাবি করেন, টাঙ্গুয়ার হওরের উন্নয়ন হয়েছে কাগজে-কলমে। বাস্তবে হাওরটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সভার প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুৎফুর রহমান বলেন, আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের অভিযোগের সত্যতা প্রতীয়মানের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিতেও এসেছে। এ ব্যাপারে বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।
টাঙ্গুয়ার হাওর সমাজভিত্তিক টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমি এখানে একেবারে নতুন। মানুষের মাঝে আমাদের কর্মকান্ড নিয়ে যে ক্ষোভ দেখতে পাচ্ছি সেটার জবাব দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমরা মানুষের কথাগুলো গুরুত্ব সহকারে দেখার চেষ্টা করবো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুল্লাহ সিদ্দিকী, বিজিবির উপ-অধিনায়ক মাহবুবুল আলম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান আহমদ, ইরা’র নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।