সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত র্যাব ও পুলিশ সদস্যদের কোনোদিন ক্ষমা করা হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বিগত আন্দোলনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের গুম ও খুন হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে খালেদা এ কথা জানান।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে বিএনপির আন্দোলন দমনের জন্য সরকার গুম, খুন করেছে। কিন্তু তারপরও মানুষ ২০১৪ সালে নির্বাচনে ভোট না দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
খালেদা জিয়া বলেন, গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরে এলে গুমের শিকার নেতাকর্মীদের খোঁজ করার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি এই গুম, খুনে জড়িত র্যাব ও পুলিশের সদস্যদের বিচার করা হবে। তাদের কোনোদিন ক্ষমা করা হবে না। একদিন না একদিন তাদের বিচার হবে। গুম হওয়া লোকজন ফিরে না এলেও এর বিচার পেলে পরিবারের লোকজন শান্তি পাবে বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
ইফতারে আন্দোলনের সময় গুম, খুন হওয়া ৩৮টি পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ইফতারের প্রায় আধঘণ্টা আগে অনুষ্ঠানস্থলে এসে খালেদা জিয়া আমন্ত্রিত পরিবারগুলোর সঙ্গে টেবিলে টেবিলে ঘুরে কুশল বিনিময় করেন। গুম, খুন হওয়ার পরিবারের সদস্যরাও খালেদা জিয়াকে কাছে পেয়ে স্বজনদের ফিরে পাওয়ার আকুতি জানান। অনেকে এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের প্রতি সমবেদনা জানান।
উপস্থিত স্বজনদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, যারা গুম হয়েছে তারা কোথায় আছে জানি না। তবে আপনারা যেমন আশা করে আছেন আমরাও সে আশায় বসে আছি। তারা হয়তো আমাদের মধ্যে ফিরে আসবে। আমরাও ওদের ভাই-বোনের মতো মনে করেছি। সন্তানহারার ব্যথা আমি ভালো বুঝি।
ক্রসফায়ারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘কথা নেই, বার্তা নেই একটা নিরীহ ছেলেকে মেরে ফেললো। এটা মানা যায় না। তাকে অন্যায়ভাবে গুলি করে মেরে ফেলছে। আওয়ামী লীগ জালেম, খুনি ও গুপ্তহত্যাকারী।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যেন শিগগির তাদের (আওয়ামী লীগ) বিচার করেন। দুনিয়াতেই যেন এদের শাস্তি হয়। যাতে মানুষ দেখে যেতে পারে।’
বিএনপিকে ধ্বংস করা সরকারের টার্গেট এমন অভিযোগ করে খালেদা বলেন, ‘ভালো ভালো যুবক ছেলেরা বিএনপিতে আসছে। এটাও আওয়ামী লীগের হিংসার কারণ। তারা চায় কিভাবে বিএনপিকে ধ্বংস করা যায়।’
সাম্প্রতিক দেশব্যাপী পরিচালিত সাঁড়াশি অভিযানে যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের মধ্যে বিএনপির প্রায় চার হাজারের মতো নেতাকর্মী রয়েছে বলেও দাবি করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, যারা গুম হয়েছে তারা যেখানেই থাকুক তারা যেন ভালো থাকে। যেখানেই থাকুক তারা যেন বেঁচে থাকে।
ইফতারের আগে ছাত্রদল নেতা চঞ্চলের ছেলে আহাদ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘হাসিনা আন্টি আমার পাপাকে ফিরিয়ে দেন। পাপাকে সঙ্গে ঈদ করবো।’
ইফতারে বিএনপি নেতাদের মধ্যে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, সহসাংগঠনিক স¤পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইফতারের আগে দেশ ও জাতির কল্যাণে মোনাজাত করা হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা দেন খালেদা জিয়া।