বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগণের যাত্রাপথ কখনওই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকেই শত্রুশক্তির সঙ্গে যুদ্ধে জয় লাভ করেই অগ্রসর হতে হয়েছে এ দেশের জনগোষ্ঠীকে। এই ভূখন্ডের বাঙালি জাতি তার সহযাত্রী অপরাপর জনজাতিগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে অনবরত শত্রুর সঙ্গে লড়াই করে অগ্রসর হয়েছে, কালে কালে। সর্বসময়ে সর্বাবস্থায় শত্রু ছিল দেশি-বিদেশি মিলে দু’প্রকার। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থেকেছে দেশি মীরজাফরেরা এবং এখন তেমনটাই আছে। এ দেশের ইতিহাস তাই বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে অন্তহীন সংগ্রামের ইতিহাস। বর্তমানে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চক্রের পৌরহিত্যেপুষ্ট সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের সঙ্গে লাড়াই করে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। এ এক ভয়ঙ্কর ক্রান্তিকাল অতিক্রমের কাল, এক যুগসন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। অবস্থা এমন যে, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট মনে করছে বাংলাদেশে রাজনীতিক, মানবাধিকার ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রম অবনতিশীল অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। তাই ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য বাংলাদেশ নিয়ে যৎপরনাস্তি উদ্বিগ্ন। সদস্যরা মনে করছে, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে উন্নয়নের যে রূপকল্প শেখ হাসিনার সরকার ঘোষণা করেছেন, সে জন্য যে সামাজিক ও আর্থনীতিক দ্রুতোন্নয়ন আবশ্যক, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অর্থাৎ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উৎপাত প্রতিরোধ করতে না পারলে, রূপকল্প ২০২১ বাধাগ্রস্ত হবে অর্থাৎ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে অর্থাৎ বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উন্নয়ন সম্ভব হবে না।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার গৃহীত কার্যক্রমে দেশবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা মনে করি, এই অবস্থায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আর সেই সঙ্গে চাই সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনের স্ফূরণ। প্রশাসন ও জনগণের যৌথ প্রচেষ্টায় বর্তমানের আপতকাল অতিক্রম করার আর কোনও বিকল্প নেই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে সকল বাধা চূর্ণ করার কর্মযজ্ঞে নামতে হবে জাতিকে।