বিশেষ প্রতিনিধি ::
দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের ছাত্রত্ব না থাকায় নেতৃত্ব পর্যায়ে ‘ছাত্র সংকটে’ পড়েছে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদল। জেলা, উপজেলা, পৌর ও কলেজ কমিটির দায়িত্বে থাকা ৯০ ভাগ নেতাদেরই এখন আর ছাত্রত্ব নেই। এমন ইমেজ সংকটের কারণে ফলে প্রকৃত ছাত্রদের দলে টানতে পারছেন না তারা। জেলা আহ্বায়ক কমিটির ২০ সদস্যের কয়েকজন বাদে প্রায় সকলেই বিবাহিত। ছেলেপুলের বাপ এসব ছাত্রনেতাদের অনেকেই বয়সে চল্লিশের কোটা পাড়ি দিয়েছেন। বাকিদের বয়সও চল্লিশ ছুঁই ছুঁই। ছাত্রত্ব না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি-বাকরি আর ঘরসংসার নিয়ে দিন কাটছে তাদের। নেতৃত্ব ধরে রাখার উদ্দেশ্যে কেউ কেউ অবশ্য জোড়া-তালি দিয়ে ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।
২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বর নূরুল ইসলাম নূরুলকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি। ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত হলেও বয়স প্রায় চল্লিশের কাছাকাছি এই নেতার। জেষ্ঠ্য যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুর রশিদ দ্বিতীয় মেয়াদে এবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল হক ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়িত। যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুজ্জামান, জামাল উদ্দিন বাকের, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, আবু সায়েম লিটন, আবুল কালাম, আনোয়ার জাভেদ, তোফাজ্জল হোসেন, আলফুজ্জামান বকুল, হামিদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন-এদের সকলেই বিবাহিত। বেশিরভাগ সন্তানাদির পিতা। নিয়মিত ছাত্রত্ব না থাকায় পরিবারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন তাঁরা।
অপর যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। আর যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল আহমদ চাকরি করেন ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে। অবিবাহিত যুগ্ম আহ্বায়ক ময়না মিয়া বিয়ে-শাদি না করলেও তারও ছাত্রত্ব নেই। আরেক যুগ্ম আহ্বায়কও কামরুল হাসান রাজু বয়সে তিরিশের কোটা পেরুলেও এখন এলএলবি পড়ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, জেলা ছাত্রদলের ২৪টি শাখা কমিটির ২১টির বেশিরভাগ নেতাদের কারোরই ছাত্রত্ব নেই। ২০১০ সালের পর ওই ২১টি কমিটি পুনর্গঠন না করায় এমন অবস্থা।
জেলা ছাত্রদলে সাবেক আহ্বায়ক নাদির আহমদ বলেন, সময় মতো কেন্দ্রীয় সংসদ যদি জেলা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিতো তবে নেতৃত্বে ছাত্রত্ব সংকটের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। এছাড়া জেলা কমিটি গঠনের সয়ম দুই মেরুর দুইজনকে কমিটি গঠনের যৌথ ক্ষমতা দেয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে মতৈক্য না হওয়ায় কোথাও কোন কমিটি গঠন হয়নি। তিনি বলেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যারা সক্রিয় ও নিয়মিত ছাত্র তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা জরুরি।