সারাদেশের প্রেক্ষিতে অর্থাৎ জাতীয় ক্ষেত্রের বৃহৎ পরিসরে খুন, গুম, গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, জঙ্গিত্ব ইত্যাদি যেমন নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনায় পর্যবশিত হয়েছে, তেমনি গাঁও-দেশের বর্তমান সমাজবাস্তবতায় বিভিন্ন প্রকার অসামাজিক কর্মকান্ডও প্রতিনিয়ত ঘটতে ঘটতে প্রাত্যহিক হয়ে উঠেছে। এইসব অসামাজিক কর্মকান্ডের একটি হলো ধর্ষণ, কিন্তু ধর্ষণটি আবার রূপবদল করে গণধর্ষণে রূপান্তর লাভ করেছে, যেটি এই সমাজব্যবস্থা যে পচেগলে একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে তার উদাহরণ। অর্থাৎ সমাজটিকে বদলাতেই হবে।
গতকালের সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদশিরোনাম ছিলÑ “তাহিরপুরে এতিম কিশোরীকে গণধর্ষণ : চারদিন পর থানায় মামলা দায়ের”। এইরূপ গণধর্ষণের ঘটনা তাহিরপুরে একেবারে নতুন নয়। বেশ ক’বছর আগে ছয় দুর্বৃত্ত এক তরুণীকে ধর্ষণ করে, ধারণকৃত চিত্র আন্তর্জালে (ইন্টারনেট) ছড়িয়ে দিয়েছিল। তাছাড়া গণধর্ষণের সংবাদ পত্রিকায় অহরহ পড়তে পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সমাজের প্রভাবশালী চক্র ধর্ষকের পক্ষাবলম্বন করে ধর্ষিতার বিচারপ্রাপ্তিকে প্রায় অসম্ভব করে তোলে। ধর্ষণ ঘটনার ক্ষেত্রে সমাজের সাক্ষী গোপাল হয়ে থাকার প্রবণতা ধর্ষিতার বিচারবঞ্চনাকে অনিবার্য করে তোলে।
সংবাদে বলা হয়েছেÑ “পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসতে চাইলে ধর্ষকের পরিবার বাধা দেয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, ঘটনার খবর শুনতে পেয়ে, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে, তাৎক্ষণিকভাবে তাহিরপুর থানা কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা করেন।”
ধর্ষণ প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগের কোনও বিকল্প আপতত নেই। এর বাইরে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে, মানুষের মনে মূল্যবোধের জাগরণ ঘটিয়ে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে। আইনানুসারে ধর্ষকের শাস্তি হোক আমরা চাই। তারপরও ধর্ষক ও ধর্ষকের পক্ষাবলম্বনকারি পরিবার বা ব্যক্তির আইনি পদ্ধতিতে শাস্তি হোক বা না হোক, সমাজের পক্ষ থেকে ধর্ষককে জানিয়ে দিতে হবে, ঘৃনাই ধর্ষকের একমাত্র প্রাপ্তি।