বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি ঝিমিয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে জোরালো কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না সংগঠনটিকে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের আগ থেকেই বলতে গেলে রাজপথে অনুপস্থিত দলটি। মাঝে-মধ্যে ছোট ছোট অনুষ্ঠানে দেখা গেলেও কর্মসূচি পালনে দায়সারাভাব লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জ জেলা কমিটি বহুদিন ধরেই বহুধা বিভক্ত। কেন্দ্রীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত থাকলেও কোন্দলের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বিভক্ত হয়ে দায়সারা কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কিছু নেতাকর্মী নিয়ে মাঝে-মধ্যে কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেলেও ‘উপকোন্দলে’র কারণে তাঁর বলয়ের অনেক নেতারাই এখন কর্মসূচিতে থাকেন না।
জেলা বিএনপি’র একটি সূত্র জানায়, গত বছর জেলার বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিট কমিটি গঠন নিয়ে কোন্দল আরো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। বিবদমান পক্ষগুলো জেলা আহ্বায়ক ‘এক তরফা’ কমিটি দিচ্ছেন এই অভিযোগ এনে তারাও পাল্টাপাল্টি কমিটি দিতে থাকেন। বিভক্তি রেখার মধ্যেও বিভিন্ন উপজেলায় যখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয় তখন কেন্দ্রীয় নির্দেশে কমিটি গঠন স্থগিত করা হয়। এরপর থেকেই ঝিমভাব দেখা দেয় সংগঠনে।
স্থানীয় সরকারের নির্বাচন নিয়ে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় ব্যস্ত হয়ে পড়ায় প্রায় দুই মাস কোন কর্মসূচিতে তাদের দেখা যায়নি। নির্বাচন চলে যাওয়ার পরও রাজপথে জোরালো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছেনা দলটিকে। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে রমজানের পর রাজপথে সক্রিয় হবে দলটি। এর মধ্যে নিজেদের মধ্যে যে দূরত্ব চলছে তা কমিয়ে আনতেও উদ্যোগ নেওয়া হবে। ঈদের পরে জেলা কমিটি আনুষ্ঠানিক মিটিং করে কর্মসূচি পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, অসম্পন্ন উপজেলা কমিটি সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে আভ্যন্তরীণভাবে কাজ চলছে। কমিটিগুলো নিয়ে পেপারওয়ার্ক করা হচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকার বিভক্ত নেতাকর্মীদের সঙ্গেও দূরত্ব কমিয়ে আনতে আলোচনা চলছে। ঐক্যবদ্ধ বিএনপি’র লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, রমজানের কারণে সকল ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক ছন্দপতন ঘটে। ঈদের পরে নিয়মিত কর্মসূচিতে ফিরব আমরা। তাছাড়া এখনো আমরা কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কর্মসূচিগুলো পালন করছি।
জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে প্রায় দুই মাস নেতাকর্মীরা ব্যস্ত ছিলেন। তবে এর মধ্যেও কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এখন উপজেলা, পৌরসভা ও থানার সাংগঠনিক ইউনিট কমিটির পেপারওয়ার্ক করা হচ্ছে। ঈদের পর কমিটি নিয়ে কার্যকর আলোচনা হবে। নেতাকর্মীরাও রাজপথে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় হবেন।