আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ‘ভেজাল’ একটি আতঙ্ক রূপে আবির্ভূত হয়েছে। বর্তমান সময়ে খাদ্যে ভেজালের পরিধি এতটাই বেড়ে গেছে যে এর ভিড়ে নির্ভেজাল খাদ্য চিনে নেয়াটা দুরূহ। প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা কাজটি করেই যাচ্ছে। ফলে ভোক্তা তার কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে মানস¤পন্ন পণ্য কিনতে পারে না। সঙ্গে আছে ওজনে, মাপে কারচুপি, অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন। অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বাণিজ্যের কারণে পদে পদে প্রতারিত হতে হচ্ছে ভোক্তাকে।
বর্তমানে পবিত্র রমজান মাস চলছে। রমজানকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে মুনাফা অর্জনের চেষ্টা চালায়। পাশাপাশি পচা, ভেজাল, বাসি খাদ্য ভোক্তাদের হাতে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। আশার কথা হল, এসব ভেজাল রুখতে সুনামগঞ্জ প্রশাসন জোর তৎপরতা অব্যাহত রাখছে। স্বয়ং জেলা প্রশাসক ভেজালবিরোধী অভিযানে নেমে পড়েছেন। তাঁর এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
জীবন-জীবিকার তাগিদে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছেন। তবে তারা যেন খাদ্যে ভেজাল না মেশাতে পারে অন্তত সে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সেজন্য সরকারি মোবাইল টিমের মাধ্যমে ভেজাল-বিরোধী অভিযান প্রতিনিয়তই চালাতে হবে। অভিযানের আওতা বাড়াতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এর সাথে ভোক্তা সাধারণকেও স¤পৃক্ত করা যায়।
এটা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক কথা, বর্তমানে ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে জনগণ এমনিতেই সোচ্চার হচ্ছে। প্রয়োজন সময়োপযোগী দ্রুত পদক্ষেপ।
ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার্থে জাতিসংঘ স্বীকৃত ৮টি অধিকারের কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- মৌলিক চাহিদা পূরণের অধিকার, নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়ার অধিকার, পণ্যের তথ্য পাওয়ার অধিকার, ন্যায্যমূল্যে সঠিক পণ্য জানা ও বাছাইয়ের অধিকার, অভিযোগ ও প্রতিকার পাওয়ার অধিকার, পণ্য ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার, ক্রেতা-ভোক্তার অধিকার ও দায়িত্ব স¤পর্কে শিক্ষার অধিকার ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের অধিকার প্রভৃতি। বাংলাদেশের সংবিধানেও ভোক্তা অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে জনসম্পৃক্ততা অপরিহার্য।