বিশেষ প্রতিনিধি ::
১৯ মে রাত সাড়ে ১২টা। প্রায় ঘুমিয়ে পড়া শহরের সুরমা ভ্যালি রিসোর্ট থেকে বেরুনোর পর কাজীর পয়েন্টের মুখেই দেখা গেল চারটি কুকুর এলোপাতাড়ি ঘুরছে। দু’একজন সাবধানী পথচারীকে দেখা গেল ক্ষ্যাপা কুকুর থেকে নিরাপদ দূরত্ব রেখে পথ চলতে। এখান থেকে একটু এগিয়ে পাইওনিয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে আরো ৩টি কুকুরকে দেখা গেল।
এভাবে উকিলপাড়া পয়েন্টে ৫টি, পুরাতন কোর্ট এলাকার শিল্পকলা একাডেমির সড়কের মোড়ে ৪টি, ট্রাফিক পয়েন্টে ৬টি, কালিবাড়ি পয়েন্টে ৭টি এবং পুরাতন বাসস্টেশন এলাকায় আরো ৬টি কুকুর দেখা গেল। এক রাতে এভাবেই অর্ধ রাতের শহরের রাজপথ কুকুরের দখলে দেখতে পাওয়া যায়। অনেকে জানিয়েছেন রাতের মতো দিনেও বিভিন্ন এলাকায় ক্ষ্যাপা কুকুর দেখতে পাওয়া যায়। ফলে শহরে কুকুর আতঙ্কে বিরাজ করছে।
জানা গেছে, একটি পরিবেশবাদি সংগঠনের রিটের কারণে সারাদেশেই কুকুর নিধন বন্ধ রয়েছে। তবে সুনামগঞ্জ পৌরসভা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃহস্পতিবার রাত থেকে সপ্তাহব্যাপী কুকুর নিধন শুরু করার কথা রয়েছে।
বিভিন্ন পাড়ার নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাড়া-মহল্লায় কুকুরের উৎপাত বেড়ে গেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘদিন ধরে কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় শহরের প্রতিটি রাস্তায়ই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কুকুরের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। তবে রাতে শহরের প্রতিটি রাস্তাঘাটেই কুকুরের উপস্থিতি বেড়ে যায়।
জানা গেছে, কুকুর কামড়ানোর ভ্যাক্সিনও হাসপাতালে নেই। এক সময় পৌরসভায় কুকুর নিধনের ভ্যাক্সিন পাওয়া গেলেও সরকারি নির্দেশে পৌরসভায় কুকুরের ভ্যাক্সিন সরবরাহ বন্ধ করে হাসপাতালে দেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে তেমন গরজ না থাকায় অধিকাংশ সময়ই ভ্যাক্সিন পাওয়া যায় না। তাই কুকুরে কামড়ালে সচ্ছল মানুষ ক্লিনিক ফার্মেসি থেকে উচ্চমূল্যে ভ্যাক্সিন কিনে ব্যবহার করলেও গরিব মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। সম্প্রতি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কুকুর নিধনে মাইকিং প্রচারণা চালানোয় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পৌরবাসী।
শহরের ষোলঘর এলাকার বাসিন্দা জহুর আলী বলেন, দিনে যেমন তেমন একটু রাত করে শহরের রাস্তায় বের হলে কুকুরের উৎপাত লক্ষ্য করা যায়। প্রতিটি পয়েন্টেই কুকুরের ঝাঁক থাকে। তাই কামড়ানোর আতঙ্কে থাকেন সাধারণ নাগরিকরা। জরুরি ভিত্তিতে কুকুর নিধন কর্মসূচির দাবি জানান তিনি।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার সেনেটারি ইন্সপেক্টর মো. সেলিম আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় শহরে কুকুরের উৎপাত বেড়েছে। তবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সপ্তাহব্যাপী কুকুর নিধন শুরু হয়েছে। কুকুর নিধন শেষ হলে নাগরিকরা স্বস্তিতে রাস্তাঘাটে চলাচল করতে পারবেন বলে তিনি জানান।