সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবীর নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত শহরের মল্লিকপুর খাদ্যগুদামে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দালালচক্রের চার সদস্যকে প্যানেলকোড ১৮৬ ধারায় অর্থদন্ড প্রদান করেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সাথে ছিলেন র্যাব-৯ সিপিসি-৩ সুনামগঞ্জ কোম্পানির একটি বিশেষ পেট্রল। যার নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার ও সহকারি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে অভিবাদন জানাই।
হাওরাঞ্চলে অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, অকাল বন্যা, হাওররক্ষাবাঁধ ভাঙন ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের অপ্রতিরোধ্য আক্রমণে কৃষকরা ব্যাপকারে ফসলহানির শিকার হয়েছেন। কৃষকের এই ক্ষতি একটি অপূরণীয় ক্ষতি। তারপরও মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা খাদ্যগুদামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের সরকারি কার্যক্রমকে ব্যর্থ করে দিয়ে কৃষককে উৎপাদন খরচের বেশি মূল্যে ধান বিক্রি করা থেকেও বঞ্চিত রাখছে। ফড়িয়ারা কৃষককার্ড হস্তগত করে কৃষকের কাছ থেকে কমমূল্যে ক্রয় করা ধান বেশি মূল্যে সরকারি খাদ্যগুদামে বিক্রি করছে। সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী বলেছেনÑ “অভিযান চালিয়ে খাদ্যগুদাম থেকে ৪ দালালকে ধরে অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫০টি কৃষককার্ড উদ্ধার করা হয়।”
বর্তমান কৃষকবান্ধব সরকার কৃষকদের কল্যাণের জন্য সরকারি গুদামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে কৃষকের সুবিধাজনক দামে ধান ক্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু মুষ্টিমেয় মধ্যস্বত্ত্বভোগী ফড়িয়া সরকারি সে কার্যক্রমকে নিজেদের সুবিধা অর্জনের অভিপ্রায়ে বেআইনিভাবে ব্যবহার করছে। প্রকারান্তরে সরকারকে করে তোলছে কৃষকবিচ্ছিন্ন অর্থাৎ জনবিচ্ছিন্ন।
কৃষি হচ্ছে দেশের অর্থনীতির বড় চালিকাশক্তি। আর এই চালিকাশক্তির দাবিদার হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষক। কিন্তু তাদের কষ্টে, শ্রমে ফলানো ফসল বিক্রির মুনাফা মধ্যস্বত্তভোগীদের হাতে চলে যায় তা বড় অন্যায় ও অমানবিক। এই অন্যায় কর্মকান্ডে তথা অপকর্মে সমাজের বিবেকবান কোনো মানুষই সমর্থন দিতে পারে না।
যারা এই অন্যায়, অপরাধের সাথে জড়িত তাদেরকে কঠোরভাবে প্রতিরোধ এবং এদের মুখোশ উন্মোচন করা হোক। তাছাড়া ভবিষ্যতে যাতে কৃষক তাঁর কষ্টে ফলানো সোনার ফসল ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারে তা নিশ্চিত করা হোক।