বিশেষ প্রতিনিধি ::
শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে হঠাৎ মড়কে হাজার হাজার হাঁস মারা যাচ্ছে। এতে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারি ও হাঁস ফার্মের মালিকরা। চিকিৎসার জন্য রোগাক্রান্ত হাঁস নিয়ে এসে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিস বন্ধ পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৩৭০০ হাঁসের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে মারা যাওয়া হাঁসের পরিমাণ আরো বেশি বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, লালন-পালনে সহজ লভ্যতার কারণে শাল্লা উপজেলার প্রতিটি গ্রামেই ফার্ম করে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে হাঁস পালন করেন। তাছাড়া অনেক কৃষকও ব্যক্তিগতভাবে হাঁস পালন করেন। প্রতি বছরই এমন সময়ে মড়ক লেগে হাজার হাজার হাঁস মারা যায় বলে তাঁরা জানান।
একাধিক হাঁস ফার্মের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোগ আসার পর কয়েকদিন যাওয়ার পরই মারা যাচ্ছে। রোগাক্রান্ত হাঁস নিয়ে ঔষধের জন্য প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়েও তারা কাউকে পাননা বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত আনন্দপুর গ্রামের বকুল দাসের ৭৩০টি, প্রজেশ দাসের ৬৫০টি, কৃষ্ণ চক্রবর্ত্তীর ২৬০টি, বিকাশ দাসের ১৯০টি, হবিবপুর গ্রামের রেবতী দাসের ৭৮০টি, নিয়ামতপুরের সাধন দাসের ৫৩০টি, আঙ্গারুয়া গ্রামের কানু দাসের ৫৬০টি হাঁস মারা গেছে। তাছাড়া অন্যান্য গ্রামেরও আরো কৃষকের হাঁস এভাবে মারা যাচ্ছে এবং আক্রান্ত হচ্ছে।
আনন্দপুর গ্রামের হাওর স্বপ্ন সিআরসির পরিচালক বিকাশ চক্রবর্ত্তী বলেন, এই এলাকায় হঠাৎ হাঁসের মরকি (মড়ক) দেখা দিয়েছে। মরকি আসার পরপর আমিসহ হাঁসের ফার্মের কয়েকজন মালিক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে অফিসের দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে ফিরে এসেছি। আশেপাশের লোকজনের কাছে পশু বিষয়ক ডাক্তারের অবস্থান জানতে চাইলে তাঁরা জানান, এই অফিসের দরজা সবসময় বন্ধই তাকে। ডাক্তার আছে কি নাই তারা জানেনা এবং চিনেননা বলেও জানান আমাদের। তিনি বলেন, সময় মতো চিকিৎসা করাতে পারলে হাঁসগুলো বাঁচানো যেত।
সোমবার সকাল ১১টায় এই প্রতিবেদক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখেন অফিসের দরজা বন্ধ। আশে-পাশে কেউ নেই। কার্যালয়ের উপরে সাইনবোর্ডে পুরাতন পশু সম্পদ অধিদপ্তর লিখা রয়েছে। ৭-৮ বছর আগে অধিদপ্তরের নাম বদলে গেলেও এখনো পশু অধিপ্তর রয়ে গেছে।
ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের সজীব নামে এক যুবক বলেন, প্রতিবেশী হিসেবে আমরা এই অফিস একদিনও খুলতে দেখিনা। ডাক্তার আছে কিনা, তাও জানিনা। সব সময় গেইটে তালা থাকে। তিনি বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন মানুষ হাসপাতালে আসলেও বন্ধ দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যান। জরুরি ভিত্তিতে তিনি শাল্লার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দিকে সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়ার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আজহারুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।