সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ফেক আইডি এবং দেশের বাইরে অবস্থানরত অ্যাডমিনের মাধ্যমে পরিচালিত ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট, ব্লগ ইত্যাদির ওপর বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী এবং গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারি করছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
তারানা হালিম জানান, ইন্টারনেটের মাধ্যমে মিথ্যা, মানহানিকর, অপবাদমূলক, হয়রানিমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ, জঙ্গিবাদী, ঘৃণামিশ্রিত, শিশুদের অপব্যবহার, অশ্লীল, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধের জন্য ক্ষতিকর বক্তব্য বা বিষয়বস্তু প্রচার রোধে এবং এসব ক্ষতিকর ওয়েবসাইটে জনগণের প্রবেশ ঠেকানোসহ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। ফেসবুক তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ৫৮টি অনুরোধের মধ্যে ২১টি অনুরোধে সাড়া দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রথম ফেসবুক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে যে, তারা ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারের চাহিদা অনুযায়ী ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ তথ্য এবং চারটি কনটেন্ট ব্লক করেছে। গুগলের ইউটিউবেও নীতিমালা পরিপন্থী ভিডিও সরকারের অনুরোধে বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এছাড়া শিশু পর্নোগ্রাফি রোধে এবং সাইবার নিরাপত্তায় মাইক্রোসফটের সঙ্গেও সরকার কাজ করছে।
মো. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন (আইএসএস) সিস্টেম ক্রয় প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তিনি জানান, এনটিএমসি এবং সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আসা রাষ্ট্র-সমাজবিরোধী ও ধর্মবিরোধী কনটেন্ট আইআইজি’র মাধ্যমে বন্ধ করা হয়ে থাকে। সাধারণ জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে আপত্তিকর কনটেন্ট আইআইজি’র মাধ্যমে বন্ধ করা হয়। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি নিশ্চিত করার জন্য অধিকতর শক্তিশালী করার উদ্দেশে ইন্টার সেফটি সলিউশন সিস্টেম ক্রয় প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
তারানা হালিম বলেন, ফেসবুক, গুগল ও মাইক্রোসফটের সঙ্গে বিশদ আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা হয়েছে, যুক্তিগ্রাহ্য অনাকাক্সিক্ষত বিষয়গুলো সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা প্রতিকার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ফেসবুক, গুগল ও মাইক্রোসফটের এসিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সদর দফতরগুলোর সহায়তায় বিটিআরসি এবং এলইএ (‘ল’ এনফোরসমেন্ট এজেন্সি) সংশ্লিষ্ট কর্মকতাদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলেও প্রতিমন্ত্রী জানান।
মোহাম্মদ ইলিয়াছের প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম জানান, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের আগ পর্যন্ত সঠিকভাবে গ্রাহকের পরিচিতি নিশ্চিত করার কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা ছিল না। পরীক্ষামূলকভাবে নমুনা যাচাই করে দেখা যায় যে, দেশের অধিকাংশ গ্রাহকের পরিচিতি সঠিক নয়। তবে বর্তমান বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রাহকের পরিচিতি নিশ্চিতকরণ সম্ভব হচ্ছে, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে সহায়তা করবে। তিনি জানান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি) থেকে বাংলাদেশ ক¤িপউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিডিসিএসআইআরটি) নামে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ইন্টারনেটভিত্তিক অপরাধ দমনে সহায়তা করা হচ্ছে।