সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলার ১১ আসামির মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নয়জনকে আগামী ২৪ জুলাই আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার ঢাকার দুই নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক হোসনে আরা বেগম এ নির্দেশ দেন।
সেদিন খালেদাসহ অন্য যাদের হাজির হতে হবে তারা হলেন- বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, এম কে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এ কে এম মোশারফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মো. আমিনুল হক, হোসাব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, জ্বালানি ও খনিজ স¤পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম এবং পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মুইনুল আহসান।
আরেক আসামি পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। রোববার তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
মামলায় নজরুল ইসলাম ও মুইনুল আহসানের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এদিন আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমানের মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তারা।
আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মোয়াজ্জেম হোসেন, নজরুল ইসলাম, মুইনুল আহসান ও মোশারফ হোসেনের পক্ষে উচ্চ আদালতের আদেশ আগামী তারিখে দাখিলের জন্য দিন রাখা হয়েছে।
২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি মামলায় স্থায়ী জামিন পান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা।
বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এতে বলা হয়, চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ই¤েপার্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি করেছেন।
খালেদা মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেওয়া হয়। হাই কোর্টের ওই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় আটকে যায় বিচার।
সাত বছর পর ২০১৫ সালের শুরুতে দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিলে হাই কোর্টের দেওয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়।
শুনানি শেষে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের হাই কোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে রায় দেয়। পাশাপাশি মামলার ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশও তুলে নেওয়া হয়।
গত ২৫ মে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দিন আটকে থাকা এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম আবার শুরু হয়। পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারিক আদালতকে দ্রুত মামলাটি নি®পত্তি করতে বলা হয়।
মামলার ১৬ আসামির মধ্যে জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ও মতিউর রহমান নিজামীর একাত্তরের মানবতাবিরোধী মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় ও বিএনপির মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া ক্যান্সারে মারা যাওয়ায় মামলার আসামি হিসেবে তাদের বিচারও স্থগিত হয়েছে।
আরেক আসমি পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এ আর ওসমানী ২০১২ সালের ১ অক্টোবর মারা যাওয়ায় তাকেও মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।